আমেরিকাকে জবাব দিতে এ বার ‘মোয়াব’ বোমা বানাল চিন

সফল মোয়াব পরীক্ষা চিনের।

শক্তিশালী দানব বোমা বানিয়ে ফেলল চিন। যার সফল পরীক্ষাও ইতিমধ্যে সেরে ফেলেছে তারা। সে দেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে শুক্রবার তার ভিডিয়ো সামনে এল। জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করতে ২০১৭ সালে আফগানিস্তানে 'মাদার অব অল বম্বস' (মোয়াব) ফেলেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই বোমা তারই চৈনিক সংস্করণ বলে দাবি করেছে বেজিং। পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্র বাদ দিলে, এটাই তাদের হাতে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা।
প্রতিরক্ষা সংস্থা চায়না নর্থ ইন্ডাস্ট্রিজ গ্রুপ কর্পোরেশন লিমিটেড (নরিনকো) বোমাটি তৈরি করেছে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে এইচ-৬কে বোমারু বিমানের মাধ্যমে নিক্ষেপ করে সেটির সফল পরীক্ষা করা হয়। যার ভিডিয়ো আপলোড করা হয় নরিনকো-র ওয়েবসাইটে। বিষয়টি সামনে আসার পর থেকেই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, বোমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুনের কুণ্ডলী-তে ঢেকে যায় চারদিক। 

পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হলেও এতদিন অস্ত্রশস্ত্রের পরীক্ষা গোপনেই সারত চিন। এই প্রথম এ ভাবে নতুন কোনও বোমা নিয়ে ক্ষমতা জাহির করতে দেখা গেল তাদের। চিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসে বোমাটি নিয়ে সবিস্তার আলোচনা করেছেন বেজিং নিবাসী প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ উই দোংজু। তিনি জানিয়েছেন,  বোমাটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫-৬ মিটার। ওজন বেশ কয়েক টন। আকারে বড় হওয়ায় একবারে একটা বোমাই বহন করতে পারে এইচ-৬কে বোমারু বিমান।

উই দোংজু জানান,  ''শক্তিশালী ওই বোমা একটা গোটা এলাকা গুড়িয়ে দিতে পারে। আবার সেনাবাহিনীরও কাজে আসতে পারে। বন্ধুর এলাকা এবং বন-জঙ্গল সাফ করে সেখানে সেনা ঘাঁটি গড়তে চাইলে, অথবা কপ্টার ওঠানো নামানো করতে চাইলে, একটি বোমা ফেললেই হবে। মুহূর্তের মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে গোটা এলাকা।  শত্রুপক্ষের মনে ভয় ধরাতেও যথেষ্ট এই বোমা।''

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোয়াবের চেয়ে তাঁদের বোমাটি বেশি উন্নত বলেও দাবি করেছেন উই দোংজু। তাঁর দাবি, ''মার্কিন বোমার তুলনায় এই বোমাটি ওজনে হাল্কা। যে কারণে বোমারু বিমান থেকেই নিক্ষেপ করা সম্ভব। তাই দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানো সম্ভব।''
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোয়াবের চেয়ে বড় থার্মোব্যারিক বোমা রয়েছে রাশিয়ার হাতে। যাকে  'ফাদার অব অল বম্বস' (ফোয়াব) বলা হয়। মোয়াবের চেয়ে আকারে ঢের বড় এই বোমা। গ্যাস ব্যবহার করা হয় বলে এই বোমা পড়লে অভিঘাতের সৃষ্টি হয় না। তার বদলে মাশরুমের মতো দেখতে মেঘের সৃষ্টি হয়। তবে চিনা মোয়াব থার্মোব্যারিক নয় বলে দাবি করেছে নরিনকো।