যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, চরম সাজা পেল গুরু রাম রহিম


ধর্ষণের মামলায় ইতিমধ্যেই তিনি জেল খাটছে স্বঘোষিত ধর্মগুরু রাম রহিম। সাংবাদিক খুনের অভিযোগেও দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিম। সাজা ঘোষণা হল বৃহস্পতিবার। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হলো তাকে। সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হল। ২০০২ সালে সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতি খুনের ঘটনায় রাম রহিম সহ–তিনজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনালো বিশেষ সিবিআই আদালত।
বৃহস্পতিবার পাঁচকুলাতে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে হয় এই মামলার শুনানি। সকাল থেকেই আদালত চত্বর ঘিরে ফেলা হয়েছিল পুলিস দিয়ে। পুলিসের ডেপুটি কমিশনার প্রভজ্যোৎ সিং বলেন, সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ডেরা সাচ্চা সৌদার সদর দপ্তরের আশপাশে মোতায়েন করা হয়েছে কম্যান্ডো বাহিনী। পাঁচকুলা আদালত চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে ৫০০ পুলিসকর্মী। আদালতের চারপাশে তৈরি হয়েছে ব্যারিকেড।

২০০২ সালে 'পুরা সাচ' নামে এক পত্রিকায় জনৈক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির চিঠি ছাপা হয়। তাতে লেখা হয়েছিল, রাম রহিমের আশ্রমে সাধ্বীরা নিয়মিত যৌন হেনস্থা এবং ধর্ষণের শিকার হন। কয়েক মাস পরে ২৪ অক্টোবর ওই পত্রিকার সম্পাদক রামচন্দ্র ছত্রপতি সিরসায় নিজের বাড়ির কাছে গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছিল। তিন সপ্তাহ বাদে সাংবাদিক ছত্রপতি মারা যান। সিবিআই চার্জশিটে বলে, ডেরার কর্তা কিষেণলাল নিজের লাইসেন্সড রিভলভার ও একটি ওয়াকি টকি দিয়েছিলেন দুই খুনিকে। তাদের নাম কুলদীপ সিং ও নির্মল সিং। খুনের ষড়যন্ত্র করার সময় উপস্থিত থাকতেন গুরমিত স্বয়ং। কুলদীপ, নির্মল এবং কিষেণলালের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা চলছে। খুনের অভিযোগে গত শুক্রবার পাঁচকুলায় বিশেষ সিবিআই আদালত গুরমিতকে দোষী সাব্যস্ত করে। শুনানির সময় ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে রাম রহিমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হত।

অন্যদিকে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন ৫১ বছরের রাম রহিম। তারপরে হরিয়ানার পাঁচকুলা ও সিরসায় ব্যাপক হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। নিহত হন ৪০ জন। আহত হন বহু মানুষ। ডেরা থেকে গিয়ে রাম রহিমকে আটক করে পুলিস। ওই ধর্ষণ এবং হিংসার ঘটনায় আগেই ২০ বছরের জেলের সাজা শোনানো হয়েছিল রাম রহিমকে।‌‌