উপত্যকার একদা ‘জঙ্গি’, দেশের জন্য প্রাণ দিয়ে এ বার পেতে চলেছেন ‘অশোক চক্র’

ল্যান্স নায়েক নাজির আহমেদ ওয়ানি।

হাতিয়ার ফেলে মূলস্রোতে ফিরেছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন দেশের সেনাবাহিনীতে। এ বছর প্রজাতন্ত্র দিবসে কাশ্মীরের সেই প্রাক্তন'জঙ্গি', ল্যান্স নায়েক নাজির আহমেদ ওয়ানি-কে মরণোত্তর 'অশোক চক্র' সম্মানে সম্মানিত করা হবে। বুধবার জানাল  রাষ্ট্রপতি ভবন।

রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, "আদর্শ সৈনিকের সব গুণ ছিল ল্যান্স নায়েক ওয়ানির মধ্যে। চ্যালেঞ্জের সামনে সবসময় মাথা তুলে দাঁড়িয়েছেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মনোবল হারাননি। বরং কর্তব্যের খাতিরে একাধিকবার নিজেকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন।"

অল্প বয়সে উপত্যকার জঙ্গি কার্যকলাপের সংস্পর্শে আসেন ল্যান্স নায়েক নাজির আহমেদ ওয়ানি। যোগ দেন জঙ্গি সংগঠন 'ইখওয়ান'-এ। ২০১৪ সালে মূলস্রোতে ফিরে আসেন তিনি। যোগ দেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। আদতে ভারতীয় সেনার ১৬২ নম্বর টেরিটোরিয়াল ব্যাটেলিয়নের সদস্য ছিলেন  তিনি। গত বছর ২৫ নভেম্বর  ৩৪ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ানদের সঙ্গে অনন্তনাগের বাতাগুণ্ড গ্রামে জঙ্গি অভিযানে যান।

প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র-সমেত সেখানে হিজবুল মুজাহিদিন ও লস্কর-ই-তৈবার ৬ জঙ্গি আস্তানা গেড়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর মেলে। সেই মতো অভিযান শুরু হয়। গুলি বিনিময় শুরু হয় জঙ্গি ও জওয়ানদের মধ্যে।  গোলাগুলি চলাকালীন  নাজির আহমেদ ওয়ানির গুলিতে মৃত্যু হয় এক জঙ্গির। তিনি নিজেও  গুলি বিদ্ধ হন। কিন্তু জঙ্গিরা পালানোর চেষ্টা করলে, সেই অবস্থাতেই রুখে দাঁড়ান। এক জঙ্গির সঙ্গে হাতহাতি শুরু হয়ে যায় তাঁর। তাতে ওই জঙ্গির মৃত্যু হয়।  গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে, পরে মৃত্যু হয় নাজির আহমেদ ওয়ানিরও।

অসীম সাহসিকতার জন্য এর আগে দু'-দু'টি সেনা মেডেল পেয়েছিলেন ল্যান্স নায়েক নাজির আহমেদ ওয়ানি। মৃত্যুর পর এ বার পেতে চলেছেন দেশের সর্বোচ্চ শান্তিকালীন সামরিক সম্মান 'অশোক চক্র'।