চাহিদা মেটাতে গ্রামে গ্রামে ইন্টার্ন শিক্ষক, মমতার ঘোষণা


প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগে নয়া উদ্যোগ সরকারের। সোমবার নবান্নয় প্রশাসনিক বৈঠকে শিক্ষানবিশ শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঝাড়গ্রাম, সুন্দরবন-সহ যে সমস্ত জেলায় শিক্ষক অমিল, সেখানে শিক্ষানবিশ শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। তিনি জানান, প্রাথমিক স্কুলের ক্ষেত্রে শিক্ষানবিশ শিক্ষকরা মাসিক দুই হাজার টাকা বেতন পাবেন। মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষানবিশ শিক্ষকরা পাবেন মাসে আড়াই হাজার টাকা বেতন। দুই বছরের জন্য চুক্তির ভিত্তিতে তাঁদের বহাল করা হবে। এই পদের জন্য ন্যূনতম স্নাতক পাশ করতে হবে বলে তিনি জানান।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, স্কুলের চাপ কমাতে পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাইমারি বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তাভাবনাও চলেছে।

এদিন মমতা বলেন, রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৩% ছাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, কন্যাশ্রী প্রকল্পের সাফল্যের কারণে স্কুলছুটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। একই কারণে ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে।

শিক্ষকদের বদলি করা নিয়ে নানান অনিয়ম চলছে বলেও এদিন সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই নিয়ে তিনি সভায় উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরাসরি প্রশ্ন করেন। মমতা বলেন, 'কোনও স্কুলে দেখা যাচ্ছে শিক্ষকের অভাব। কোথাও আবার অতিরিক্ত শিক্ষক রয়েছেন। এটা কেন হবে?'

মুখ্যমন্ত্রীকে শান্ত করতে পার্থ বলেন, বদলির বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্তর থেকে করা হচ্ছে। দৃশ্যত অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রীকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, 'ও সব আমি বুঝি না। ট্রান্সফার নিয়ে যেন কোনও সমস্যা না হয়।'

এদিনের সভায় নাম না করে দাড়িভিটার ঘটনা নিয়ে সভায় শিক্ষা দফতরের কর্তাদের ধমক দেন মমতা। সাবধান করে তিনি বলেন, 'কোথা থেকে কে একজন স্কুলে জয়েন করতে চলে এল। তাই নিয়ে গন্ডগোল বেঁধে গেল। এমনটা যেন আর না হয়।'

ডিআইদের কাজকর্ম নিয়েও সভায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন মমতা। ডিআইদের দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, তাঁরা নিজ নিজ এলাকার স্কুলগুলি ভিজিট করেন কি না? এর পরেই নির্দেশ দেন, এখন থেকে ডিআইরা যেন নিয়মিত ভাবে স্কুলে গিয়ে মিড ডে মিল ঠিক মতো দেওয়া হচ্ছে কি না অথবা শৌচাগারগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নেবেন।

সভায় উপস্থিত রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, অর্থের অভাবে তাঁরা কলেজ ভবন বাড়াতে পারছেন না। তার ফলে পড়ুয়াদের জন্য যথাযথ স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না। এই সমস্যা মেটানোর জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
পরে অবশ্য মমতা জানান, কোন কলেজে কী সমস্যা রয়েছে, কোথায় কত টাকার দরকার, সবটাই সমীক্ষা করা হচ্ছে। তার ফলাফল বিশ্লেষণ করে কলেজের পরিকাঠামো উন্নয়নে অর্থ জোগাবে সরকার। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না। অথচ নানান রকম ফতোয়া চাপানো হচ্ছে।