ধর্ষণ মামলা না তোলায় নির্যাতিতাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন

অভিযুক্তের হাতে খুন নির্যাতিতা।

হুমকির সামনে মাথা নোয়াননি। বরং থানায় গিয়েছেন। দায়ের করেছেন ধর্ষণের মামলা। তার জেরে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হল এক তরুণীকে। বাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে খুন করল অভিযুক্ত যুবক। গুরুগ্রাম-ফরিদাবাদ এক্সপ্রেসওয়ের খুশবু চক থেকে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত ওই তরুণী আদতে হরিয়ানার করনালের বাসিন্দা। গত চারবছর ধরে গুরুগ্রামে একটি পানশালায় নর্তকী ছিলেন। ওই পানশালাতেই বাউন্সার হিসাবে কাজ করত অভিযুক্ত সন্দীপ কুমার। একসময় দু'জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ছিল। কিন্তু ২০১৭ সালের মার্চ মাসে সন্দীপের বিরুদ্ধে থানায় যান ওই তরুণী। ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে সন্দীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায় সে। 

জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর থেকেই নির্যাতিতাকে উত্ত্যক্ত করছিল অভিযুক্ত সন্দীপ কুমার। মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছিল। এমনকি,হুমকি দিচ্ছিল তাঁর পরিবারকেও।কিন্তু তাতে ভয় পেয়ে পিছিয়ে আসেননি নির্যাতিতা। শুক্রবার ধর্ষণ মামলার শুনানি ছিল গুরুগ্রাম আদালতে। তাঁর বয়ান রেকর্ড করতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগে নাথুপুরে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় অভিযুক্ত।

নির্যাতিতার মায়ের দাবি, মেয়ের সঙ্গে আদালতে যাবেন বলে করনাল থেকে গুরুগ্রাম গিয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ আচমকাই তাঁদের বাড়িতে গাড়ি নিয়ে হাজির হয় সন্দীপ। নির্যাতিতার সঙ্গে গাড়িতে বসে কিছু ক্ষণ কথা বলতে চায় বলে জানায়। তাতে রাজি হননি নির্যাতিতা। কিন্তু জোর করে তাঁকে গাড়িতে নিয়ে গিয়ে বসায় অভিযুক্ত। তার পর আর এক মুহূর্তও নষ্ট করেনি। দ্রুত গতিতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায় সে।

পরে বেশ কয়েকবার নির্যাতিতার মাকে ফোন করে অভিযুক্ত। মামলা তুলে না নিলে, তাঁর মেয়েকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় ওই তরুণীকে গুলি করে খুন করে সে। গুরুগ্রাম-ফরিদাবাদ এক্সপ্রেসওয়ের খুশবু চক এলাকায় দেহ ফেলে চম্পট দেয়। গুরুগ্রাম পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান সুভাষ বোকান জানান, "স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বুকে, মাথায়, মোট চারবার গুলি করা হয়েছিল তাঁকে। ঘটনার পর থেকেই ফেরার সন্দীপ। ফরিদাবাদের তিগাঁওয়ের বাসিন্দা সে। তার বিরুদ্ধে বয়ান দিয়েছেন নির্যাতিতার মা। ডিএলএফ ফেজ-১ থানায় তার বিরুদ্ধে ৩০২ (খুন) এবং বেআইনি অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।"