এক টানে দু’হাজার, ধূমপান করলেই জরিমানা


মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদকে 'নো স্মোকিং জোন' হিসাবে গড়ে তুলতে নির্দেশিকা জারি করল অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ)। তাঁর জারি করা ওই নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, 'নির্দেশ অমান্য করে জেলা পরিষদের কার্যালয়ে কেউ ধূমপান করলে জরিমানা অপরিহার্য'।

জরিমানার সর্বোচ্চ পরিমাণ কম নয়, দু'হাজার টাকা। যা থেকে পরিষ্কার যে, ধোঁয়ার ঘেরাটোপ থেকে কার্যালয় মুক্ত করতে এক রকম বদ্ধ পরিকর প্রশাসন।

নির্দেশিকা জারির পর থেকেই জেলা পরিষদ জুড়ে কারও কপালে ভাঁজ কারও বা চওড়া হাসি।

জেলা পরিষদের বিভিন্ন দেওয়ালে এবং নোটিস বোর্ডে নির্দেশিকা পড়ে কেউ বলছেন, ''বড় ঝামেলায় পড়া গেল তো!'' কেউ বা বলছেন, ''যাক বাবা, এ বার নিশ্চিন্তি।''

আরও পড়ুন: ২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে দ্বারস্থ হাইকোর্টে
দিন কয়েক আগে, জেলা পরিষদ কার্যালয়ের আগুন লেগেছিল গদি আঁটা এক চেয়ারে। কী করে? সূত্র খুঁজতে গিয়েই নজরে আসে, অসাবধানে ফেলে দেওয়া সিগারেটের টুকরোই তার জন্য দায়ী। তার পরেই এ হেন নির্দেশিকা।
জেলা পরিষদের সতর্ক কর্তারা ঠিক করেন, ফের একটা অগ্নিকাণ্ড  ঘটার আগে বিহিত একটা করতেই হবে। তার জেরেই এমন ভাবনাচিন্তা। অতিরিক্ত জেলাশাসক সুদীপ্ত পোড়েল বলেন, ''পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্তি পেতে কিংবা আগুনে সরকারি সম্পত্তি পুড়ে খাক হওয়া থেকে বাঁচতে এ ছাড়া আর পথ কী!''

এ ব্যাপারে তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০০৩ সালের 'কোটপা' আইনের (সিগারেট অ্যান্ড আদার্স টোব্যাকো প্রোডাক্টস অ্যাক্ট) ২১ নম্বর ধারার কথা। জনসাধারণের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় ধূমপান নিষেধের বিজ্ঞপ্তি জারি সে জন্যই।

গত মঙ্গলবার ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেই নির্দেশিকার প্রতিলিপি জেলা পরিষদের প্রতিটি কর্মাধ্যক্ষকেও ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। তবুও নির্দেশিকা জারির পরের দিন, বুধবার বিকালে গাড়ি থেকে নেমেই সিগারেট ধরিয়ে এক কর্মধ্যক্ষ জেলা পরিষদে তাঁর নিজের ঘরে যান। জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, ''ওই নির্দেশ সদ্য লাগু হয়েছে। হয়ত সেই কারণেই অনেকেই এই নির্দেশের কথা জানেন না। অভ্যাস হতে দিন কয়েক সময় লাগবে।''

কিন্তু আপনি নিজে তো চেন স্মোকার, ঘনঘন সিগারেট ছাড়া চলে না? মোশারফ লম্বা জিভ কাটছেন।

তবে, এর মধ্যেই নতুন অভ্যাস গড়ে তুলতে, জেলাপরিষদ প্রাঙ্গণে একটি 'স্মোকিং জোন' গড়ে তোলা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে, বিভিন্ন পরিষেবা পেতে প্রতি দিন বহু সাধারণ মানুষ জেলাপরিষদে আসেন। পরিষদের কর্তারা বলছেন, এ নির্দেশ সবাইকেই মেনে চলতে হবে। তাঁদের এক জনের কথায়, ''প্রথমেই জরিমানা না করতে পারলে মুশকিল, বেড়াল মারতে হবে প্রথম রাতেই।''