কাজ না পেলেও সমস্ত নাগরিককে ন্যূনতম বেতন! চালু করার পথে সিকিম

কাজ না পেলে মিলবে সরকারের তরফে ন্যূনতম বেতন।

কাজ না করলেও সমস্যা নেই। সরকারের তরফে আপনার কাছে পৌঁছে যাবে ন্যূনতম বেতন। প্রকল্পের নাম ন্যূনতম বেতন প্রকল্প, যার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সিকিমে। ক্ষমতায় এলে ২০২২ সালের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত বাসিন্দার হাতে ন্যূনতম বেতন পৌঁছে দেওয়া যাবে বলে জানাল সিকিমের ক্ষমতাসীন পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (পিডিএফ)।

এই প্রকল্প চালু হলে দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য হবে সিকিম, যারা রাজ্যের বাসিন্দাদের হাতে ন্যূনতম বেতন পৌঁছে দিতে পারবে। যদিও ন্যূনতম বেতনের বিষয়টি সিকিমের মস্তিষ্কপ্রসূত, এরকমটা নয়। ২০১৭ সালে বিষয়টি নিয়ে একটি অর্থনৈতিক সমীক্ষা চালায় কেন্দ্র। দারিদ্র দূরীকরণে এবং সামাজিক উন্নয়নের নিরিখে এই ভাবনাকে খুবই আকর্ষণীয় বলে উল্লেখ করা হয় সেই সমীক্ষায়।

সংবাদ মাধ্যমকে পিডিএফ সাংসদ প্রেমদাস রাই জানিয়েছেন, '' ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম বা ন্যূনতম বেতন প্রকল্প চালু করতে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী পবনকুমার চামলিং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ক্ষমতায় আসার তিন বছরের মধ্যে এই প্রকল্প চালু করা যাবে বলে আমরা আশাবাদী।''

পরীক্ষামূলক ভাবে গুজরাত এবং মধ্যপ্রদেশ সরকার নিজেদের উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় এই প্রকল্প প্রথম চালু করে বলে জানিয়েছেন পিডিএফ সাংসদ প্রেমদাস রাই। কেউ কাজ পান বা না পান, কী কাজ করছেন, তাও বড় কথা নয়, সরকারের তরফে তাঁর পরিবারের কাছে পৌছে দেওয়া হবে ন্যূনতম বেতন। এই প্রকল্পের মূল কথা এটাই, জানাচ্ছেন পিডিএফ সাংসদ। সিকিমের ক্ষেত্রে অবশ্য পরিবার নয়, সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ক অথচ কর্মহীন নাগরিককেই এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।

সবার কাছে টাকা পৌঁছে দিতে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ দরকার, সেই সংস্থানের কথাও ভেবেছে সিকিম সরকার। এই মুহূর্তে সিকিমে ২২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, যার মধ্যে সিকিমের প্রয়োজন মাত্র ২০০ মেগাওয়াট। এই উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ বিক্রি করে পাওয়া টাকার পাশাপাশি পর্যটন শিল্প থেকে পাওয়া টাকা সাধারণ মানুষকে দেওয়ার জন্যই এই প্রকল্প বলে জানাচ্ছে পিডিএফ।

তাঁদের দাবি, এর ফলে বেকার যুবক-যুবতী রোজগারের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে অনেক স্বাধীন ভাবে নিজের পছন্দের কাজ করতে পারবেন। তাতে আখেরে লাভ হবে রাজ্যেরই। কিন্তু কোথাও অপব্যবহারের আশঙ্কা থাকছে কি? এই প্রশ্নের উত্তরে সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের দাবি, সামাজিক উন্নয়নের প্রশ্নে সাধারণ মানুষকে বিশ্বাস করতেই হবে।

সাধারণ মানুষকে কতটা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যেতে পারে, নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে শুরু হয়েছে সেই প্রতিযোগিতা। এই অভিনব প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেই দৌড়ে নিশ্চিত ভাবেই প্রথম সারিতে জায়গা করে নিল সিকিম।