মুকুলকেও নোটিশ দিল CBI


কলকাতা: দল বদল করে শেষ রক্ষা হচ্ছে না। তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তের স্বার্থে বিজেপি নেতা মুকুল রায়কেও নোটিশ পাঠাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি বিক্রির টাকা কোথায় খরচ হয়েছে, তার তদন্তে নেমেই তৃণমূলের অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের ডেকে পাঠিয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা। তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান নেতাদের পাশাপাশি প্রাক্তন তথা দলের প্রতিষ্ঠা সদস্যকেও নোটিশ দিয়েছে সিবিআই।

তৃণমূল কংগ্রেসের আর্থিক তহবিলের মধ্যে অনেক গরমিল রয়েছে। এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এরই মধ্যে সম্প্রতি দলনেত্রী মমতার ছবি বিক্রি নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে।

মঙ্গলবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নোটিশ ধরিয়েছিলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রীমা ভট্টাচার্য৷ চন্দ্রীমা বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিটফান্ড কর্তাদের ছবি বিক্রি করেছেন তা প্রমাণ করে দেখাক অমিত শাহ৷

বুধবার রামপুরহাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা অমিত শাহকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেছিলেন, অর্ধশিক্ষিত …গর্ধশিক্ষিতরা বাংলার ব্যাপারে কী বা জানে …৷ ''রাজ্যের হাতেও সিআইডি আছে, এসটিএফ আছে৷ আর্থিক দূর্নীতি ধরার ব্যবস্থা আছে৷ আমরাও চাইলে তদন্ত শুরু করতে পারি৷''

বৃহস্পতিবার সকালেই মমতার রাজনৈতিক জীবনের পুরানো সঙ্গী মানিক মজুমদারের বাড়িতে সিবিআই এবং ইডি হানা দিয়েছে৷ মানিকবাবু মমতার প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক৷ মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন কালীঘাটের ৩০বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের কাছাকাছিই থাকেন মানিকবাবু৷

সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেসের তহবিল সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে নেমে মোত চার জনকে নোটিশ পাঠিয়েছে সিবিআই। ওই চার জন হলেন- মানিক মজুমদার, ডেরেক ও'ব্রায়েন, সুবত বক্সি এবং মুকুল রায়। এদের মধ্যে মানিক বাবু ছাড়া সকলেই তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হয়েছিলেন। সুব্রতবাবু লোকসভার সাংসদ। এখনও রাজ্যসভার সদস্য রয়েছেন ডেরেক।

মুকুল রায় সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়ে বিজেপি শিবিরে নাম লিখিয়েছেন ২০১৭ সালের শেষের দিকে। যদিও ২০১৫ সাল থেকেই তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। সেই সময়ে এই সিবিআই তদন্ত এবং জেরার বিষয় নিয়েই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে মুকুলের। সারদা কেলেঙ্কারি থেকে নিজেকে বাঁচাতে মুকুল দলনেত্রী মমতার নাম নিয়েছিলেন বলে শোনা গিয়েছিল।

১৯৯৯ সালে রাজনৈতিক দল হিসেবে যাত্রা শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস। যাত্রা শুরু দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন না। মুকুল রায়ের হাতে যেদিন তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা হয় সেদিন মমতা কংগ্রেস নেত্রী। পরে মুকুল রায় অবশ্য তৃণমুলের দুই নম্বর হয়েই ছিলেন।

সেই সুবাদেই দীর্ঘদিন দলের নানাবিধ গুরুত্বপুর্ণ বিষয় নিজের হাতে সামাল দিয়েছেন মুকুল। দলীয় তহবিলের মতো িষয়ও ছিল তাঁরই দখলে। সেই কারণে দলত্যাগ করলেও তদন্তের খাঁড়া থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না মুকুল। কেন্দ্রের শাসক বিজেপি শিবিরে নাম লেখানোর পরে মুকুল রায়কেও নোটিশ পাঠিয়েছে সিবিআই।