NRS কুকুর হত্যাকাণ্ডে ভাইরাল হওয়া দুই তরুণী এবার পাল্টা আইনি পদক্ষেপের পথে


গত ১-২ দিনে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে এই দুই মহিলার ছবি। নীচে লেখা, "চিনে রাখুন ১৬ টি বাচ্চার খুনিদের। দীপা মণ্ডল, ঝর্ণা পুরকায়েত"। স্বাভাবিকভাবেই এনআরএস-এ কুকুরনিধনকাণ্ডে যখন নিন্দার ঝড় সবমহলে, শোরগোল গোটা রাজ্যে, সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই  ক্যাপশনওয়ালা ছবি মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। লোকে মনে করতে শুরু করেছেন, এনআরএস-এর সেই ভিডিও ফুটেজে অস্পষ্টভাবে দেখতে পাওয়া দুই মহিলা এই দুজনই। স্বাভাবিকভাবেই ছবির নীচে পড়েছে অজস্র কমেন্ট, 'জেলে ভরো', 'শাস্তি চাই'-এর মতো আরও অনেক দাবি উঠেছে ফেসবুকে। ছবি শেয়ার হয়েছে শ'য়ে শ'য়ে। কিন্তু চশমা পরা ওই মহিলাই এবার পাল্টা পুলিসের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁর  দাবি, ভিডিয়োতে দেখতে পাওয়া মহিলা তিনি নন। ভুল ছবি ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ছড়ানো হচ্ছে ফেসবুকে, যা এখন ভাইরাল। মঙ্গলবার  সকালেই যখন সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে এন্টালি থানার পুলিস, তখন অন্যদিকে নিজের সামাজিক সুরক্ষার স্বার্থে  প্রশাসনের দ্বারস্থ। মহিলার স্বামী সাইবার অ্যাক্টে মামলা রুজু করবেন বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, এনআরএসকাণ্ডে ইতিমধ্যে এন্টালি থানার পুলিসি জেরায় নিজেদের অপরাধ কবুল করেছে দুই ছাত্রী।

মনে করা হচ্ছে, আসলে 'কনফিউশন'টা তৈরি হয়েছে একটা জায়গাতেই। যাঁর চোখে চশমা রয়েছে, তাঁর নামও সঙ্গীতা বর্মন। পেশায় নার্সও। তিনি রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। পাশের জন ঝর্ণা দাস। পেশায় নার্স ঝর্ণা আগে ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। সমস্যাটা ঠিক এইখানেই। এনআরএস-এ কুকুর নিধনকাণ্ডে ভাইরাল হওয়ায় ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ক্যাম্পাসের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটেছে। ভিডিয়োর গুণগত মান এতটাই বাজে ছিল, যে অভিযুক্ত  দুই মহিলার  মুখ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল না। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান ও সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত খবরের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধারণা হয়, ওই দুই মহিলা হাসপাতালেরই নার্স। আর গণ্ডগোল বাধে সেখানেই।

কেউ বা কারা এই দুই মহিলার সঙ্গে মিল পেয়ে তাঁদেরই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ছবি নিয়ে  ক্যাপশন দিয়ে ছেড়ে দেন, যা এই মুহূর্তে ভাইরাল। সামাজিকভাবে নানা সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের, আসছে খুনের হুমকিও।  কিন্তু এই দুই মহিলার দাবি, তাঁরা কেউই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। এবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন তাঁরা।

উল্লেখ্য কিছুদিন আগে কলকাতা মেট্রোতে অভব্য আচরণের অভিযোগে  এক ছাত্র-ছাত্রীকে কিছু প্রৌঢ়ের মারধরের ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিও থেকেও কারোরই মুখ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল না। সেখানেও দুই প্রৌঢ়ের ছবি (যাঁরা আদতে সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না বলে দাবি) এইভাবেই ভাইরাল করা হয়।  

ফেসবুক বা যে কোনও সোশ্যাল মিডিয়াতে এভাবে ভুয়ো তথ্য পরিবেশন করার ক্ষেত্রে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। গঠন করা হচ্ছে সাইবার এজেন্সিও।