পরীক্ষায় উত্তরপত্র আছে, প্রশ্নপত্র নেই! PSC-তে বাঁকুড়ার স্কুলে চাঞ্চল্য


বাঁকুড়া: পরীক্ষা শুরু হয়েছে, অথচ প্রশ্নপত্র নেই। চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে ফুঁসে উঠলেন পরীক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ দেখিয়ে, প্রতিবাদ করে পিএসসি বয়কট করলেন পরীক্ষার্থীদের একাংশ। পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে এক ঘণ্টা পর পরীক্ষায় বসলেন বাকিরা। ঘটনা ঘিরে অশান্তি বাঁকুড়ার কাঞ্চনপুর হাইস্কুলে।

রাজ্য সরকারি স্তরের বিভিন্ন বিভাগে কর্মী নিয়োগের জন্য পিএসসি পরীক্ষার দিন ছিল আজ, রবিবার। বাঁকুড়ার ২ নং ব্লকের কাঞ্চনপুর হাইস্কুলে ২০০ জন পরীক্ষার্থীর সিট পড়েছিল। নির্ধারিত সময়েই স্কুলের দরজা খুলে দেওয়া হয় তাঁদের জন্য। রোল নম্বর, সিট নম্বর মিলিয়ে সকলে যথাযথ আসনে বসে পড়েন। উত্তরপত্র বিলি করে দেওয়া হয়। পরীক্ষা শুরুর হওয়ার কথা ছিল দুপুর ১টায়। কিন্তু ১টা ১৫ বেজে গেলেও, হাতে প্রশ্নপত্র পাননি ২০০ জনের কেউই। স্বভাবতই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ১৫ মিনিট সময় নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে কিছুটা ক্ষোভ তৈরি হয় তাঁদের মধ্যে। হতাশাও দানা বাঁধতে শুরু করে। একটা সময় পর যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে স্কুলচত্বরে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পরীক্ষার্থীরা। স্টাফ রুমে ঢুকেও অভিযোগ জানাতে থাকেন। জানতে চান, প্রশ্নপত্র কখন পাওয়া যাবে?  কিম্বা আদৌ তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারবেন কি না।     

এভাবেই কেটে যায় আধঘণ্টারও বেশি সময়। তখন বিক্ষোভকারীদের একাংশ পরীক্ষা বয়কটের ডাক দেন। প্রশ্নপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষা দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়ে দেন তাঁরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। সশরীরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এবং পরীক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তাঁকে ঘিরেও চলে পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। পরীক্ষা সেন্টার কাঞ্চনপুর হাইস্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকেই অভিযোগ জানাতে থাকেন। এত বড় একটা পরীক্ষার জন্য যথাযথ নিরাপত্তা এবং প্রস্তুতি নেই বলে অভিযোগ করেন পরীক্ষার্থীরা। এএসপি তাঁদের কাছে আবেদন জানান, প্রশ্নপত্রের ব্যবস্থা হয়েছে। তাঁরা যেন পরীক্ষায় বসেন। এতেও বিশেষ কাজ হয়নি। ২০০ জনের মধ্যে ৬০জনই পরীক্ষা না দিয়ে চলে যান। বাকিদের ফের ক্লাসরুমে বসিয়ে পরীক্ষা শুরু হয় দুপুর ২টো নাগাদ। কিন্তু সেখানেও সমস্যা। পরীক্ষার্থীরা এবার অভিযোগ জানান, এমন গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সিলড প্যাকেটে থাকা উচিত। কিন্তু প্রশ্নপত্র খোলা অবস্থায় ছিল। এনিয়ে তদন্তের দাবি তোলেন তাঁরা। তখনকার মতো অশান্তি ঠেকাতে বাঁকুড়া সদর থানার আইসি নিজে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রহরার দায়িত্ব নেন। তারপর শুরু হয় পরীক্ষা। রাজ্য সরকারের পরীক্ষায় কেন এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হল, তা নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বাঁকুড়ার কাঞ্চনপুর হাইস্কুলের পরীক্ষার্থীরা।