আজ ভোট-বাজেট, কমতে পারে আয়করের বোঝা, বাড়বে মধ্যবিত্তের সঞ্চয়

রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।


আয়করে ছাড় দেওয়া হবে— প্রত্যাশা ছিলই। লোকসভা ভোটের আগে শেষ বাজেটের আগের দিন সেই প্রত্যাশা আরও উস্কে দিল রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা। ৮০সি ধারায় করমুক্ত সঞ্চয়ের সীমা বাড়তে পারে বলেও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।

বাজেট অধিবেশনের শুরুতে আজ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ''আয়করের বোঝা কমিয়ে, মূল্যবৃদ্ধির হারকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে, সরকার মধ্যবিত্তের সঞ্চয় বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করেছে। পরিশ্রমী মধ্যবিত্ত মানুষের আয় বাড়াতে এবং সেই আয় উত্তরোত্তর বৃদ্ধির জন্য লগ্নির রাস্তা তৈরি করতে সরকার সচেষ্ট।''

এমনিতে ভোটের আগে অন্তর্বর্তী বাজেটে সাধারণত আয়কর হারে বদল হয় না। কারণ এ জন্য আয়কর আইনে পরিবর্তন করতে হয়। ভোটের আগের অন্তর্বর্তী বাজেটে কোনও সরকারই সেটা করে না। তার উপর আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রত্যক্ষ কর বিধি প্রকাশ হওয়ার কথা। কর বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন হারে আয়কর আদায় করতে হলে ১ এপ্রিল থেকে নতুন অর্থ বছরের শুরুতে নতুন করের হার নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। না হলে, নতুন সরকার গঠনের পর জুলাইয়ে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ না-হওয়া পর্যন্ত সরকারের পক্ষে কর আদায় করা মুশকিল।

কিন্তু লোকসভা ভোটে জিতে ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া মোদী সরকার আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা ২.৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করতে পারে বলে জল্পনা। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় তার ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতিকেরা। কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর সঙ্গে আয়করের হারও বদলে করের বোঝা কমানোর চেষ্টা হতে পারে।

তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল, রাষ্ট্রপতি তাঁর বক্তৃতায় মধ্যবিত্ত মানুষের রোজগারের টাকা সঞ্চয়ের জন্য নতুন রাস্তা খোলার কথা বলেছেন। তার ফলে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, ৮০সি-তে করমুক্ত সঞ্চয়ের সীমা দেড় লক্ষ টাকা থেকে বাড়ানো হতে পারে। এই ছাড় শেষ বার ২০১৪-'১৫-তে বেড়েছিল। গৃহঋণে কর ছাড়ের সুবিধা বাড়ানো হতে পারে বলেও অনুমান করছেন অনেকে। জাতীয় পেনশন প্রকল্প বা এনপিএস তহবিল থেকে তোলা ৬০ শতাংশ টাকা করমুক্ত রাখার মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তও আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হতে পারে বাজেটে।

বেকারত্ব নিয়ে বেশ বিপাকে সরকার। কর্মসংস্থান না বাড়ার প্রভাব মধ্যবিত্তের ওপর পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে মোদী সরকার। সঙ্গে রয়েছে নোটবন্দি ও জিএসটি-র অসুবিধা ভোগ। বাজেটে আয়করে সাশ্রয়ের সুযোগ করে দিয়ে সরকার তাই মধ্যবিত্তের মন জয়ের চেষ্টা করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।