সরকারি সুরক্ষা তুলে নেওয়া হল ৬ কাশ্মীরি নেতার উপর থেকে


মিরওয়াইজ় উমর ফারুক ও সাবির শাহ।

পুলওয়ামায় হামলার পরেই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের নিরাপত্তা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রবিবার কাশ্মীরের ছয় বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার নিরাপত্তা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ গত কালই বলেছিলেন, ''পাকিস্তান ও আইএসআইয়ের কাছ থেকে যাঁরা অর্থ পান, তাঁদের আর নিরাপত্তা দেওয়া হবে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'' আজ মিরওয়াইজ় উমর ফারুক, ফজল হক কুরেশি, আব্দুল গনি বাট, হাশিম কুরেশি, বিলাল লোন এবং সাবির শাহ— এই ছয় বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওই নেতারা সরকারি খরচে অন্য যে সব সুবিধে পান, তা-ও প্রত্যাহার করা হবে বলে সরকারি সূত্রে খবর।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে হুরিয়ত মুখপাত্র বলেন, ''আমাদের নেতারা কখনও নিরাপত্তা চাননি। সরকারই নিরাপত্তা দিয়েছিল। এখন তারাই প্রত্যাহার করেছে। এটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।''

বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে বিজেপি নেতৃত্ব স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু এর অনেকটাই দেখনদারি বলে মনে করছেন বিরোধী নেতারা। সমালোচনা করতে গেলে পাল্টা সমালোচনার মুখে পড়তে হবে জেনে বিরোধী নেতারা কেউ সে ভাবে মুখ খুলছেন না। কিন্তু তাঁদের মতে, নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার পরে এই নেতাদের উপর হামলা হলে তাতে উপত্যকায় নতুন করে আগুন জ্বলতে পারে। উপত্যকার নেতাদের পাশাপাশি বিরোধী নেতারা বারেবারেই কাশ্মীরের রাজনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজার জন্য মোদী সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছেন। আজই এনসি নেতা ফারুক আবদুল্লার বক্তব্য, কাশ্মীর সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান না হলে পুলওয়ামার মতো ঘটনা চলতেই থাকবে। 

সরকারের হিসেব অনুযায়ী, বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের নিরাপত্তা ও অন্যান্য সুবিধে দিতে রাজ্য প্রশাসনের বছরে গড়ে ১০০ কোটি টাকা খরচ হয়। তাও কেন এঁদের নিরাপত্তা দেওয়া হত? সরকারি সূত্রের বক্তব্য, এর কারণ দু'টি। এক, ওঁদের উপর হামলা রোখা। দুই, গ্রেফতার, আটক বা গৃহবন্দি না করেও তাঁদের চোখে চোখে রাখা।

প্রবীণ হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি বহু দিন ধরেই গৃহবন্দি। আবার ইয়াসিন মালিকের নিরাপত্তা আগেই তুলে নেওয়া হয়েছে। হাসিম কুরেশির ছেলে, আমস্টারডামের 'ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ'-এর ডিরেক্টর জুনেই কুরেশি বলেন, ''আমার বাবা আইএসআই-এর হাতে অত্যাচারিত হয়েছেন। বহু বছর পাক জেলে কাটিয়েছেন। নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার পরে তাঁর বা আমার পরিবারের যদি কিছু হয়, তা হলে জম্মু-কাশ্মীর ও দিল্লি সরকারই তার জন্য দায়ী থাকবে।''