১০ ঘণ্টা পরেও জ্বলছে বিলকান্দার 'জতুগৃহ', ৫ নিখোঁজের পরিণতি ভেবে আতঙ্কে স্থানীয়রা


দুপুরে আগুন লাগার পর পেরিয়ে গিয়েছে ১০টি ঘণ্টা। কিন্তু, সোদপুরের ঘোলার বিলকান্দায় চেয়ার কারখানার আগুন নেবার কোনও লক্ষ্মণ দেখাচ্ছে না। মনে করা হচ্ছে কারখানাটিতে অত্যাধিক মাত্রায় দাহ্য বস্তু মজুত থাকায় এটা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই নিখোঁজ ৫ কর্মী। এঁদের খোঁজে নানা জায়গায় তল্লাশি চলছে। আগুন নেভাতে সন্ধ্যার পরে দমকলের ইঞ্জিনের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫টি।

জ্বলন্ত কারখানার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে যান দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি জানিয়েছেন, আগের থেকে আগুনের লেলিহান শিখাকে অনেকটাই কব্জা করা গিয়েছে। তবে কারখানার মধ্যে ফোম এবং কেমিক্যাল মজুত থাকায় আগুন নিবতে সময় লাগছে। প্রথম তলের আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও দ্বিতীয় তলে আগুন জ্বলছে বলেও জানান সুজিত বসু। তিনি জানিয়েছেন যে দ্বিতীয় তলে আগুন লেগে থাকার কারণ সেখান প্রচুর পরিমাণে ফোম মজুত ছিল। এছাড়াও সেখানে ওয়েলডিং-এর কাজ চলত। ফলে মজুত রাখা ছিল গ্যাস সিলিন্ডার।

দমকল মন্ত্রী এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেছেন যে, এখন আগুন নেবানোকেই মূল লক্ষ্য হিসাবে ধরা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আগুন নেবানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কারখানার ম্যানেজারের কাছে নাকি জানা গিয়েছে যে দুপুরের শিফটে যে ক'জন কাজে এসেছিলেন তাঁদের মধ্যে ৫ জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এরা দ্বিতীয় তলায় কাজ করছিলেন। এঁরা কোনওভাবে কারখানা থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন না জ্বলন্ত অগ্নিকাণ্ডে আটকা পড়েছিলেন তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন সুজিত বসু। এই ৫ জন সম্ভাব্য যে জায়গাগুলোতে যেতে পারেন সেখানেও এদের হদিশ পাওয়া যায় কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আগুন পুরোপুরি না নিবলে যে নিখোঁজদের খোঁজে কারখানার ভিতরে যাওয়া সম্ভব নয় তাও পরিস্কার করে দিয়েছেন দমকল মন্ত্রী। কারণ, প্রথম তলে আগুন নেবাতে ঢুকে বেশ কয়েক জন দমকল কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। জানা গিয়েছে জ্বলন্ত কেমিক্যালের ধোঁয়ায় ওই দমকল কর্মীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন।

আশা করা যাচ্ছে রাতের মধ্যেই আগুনকে একদম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে ফরেনসিক দল-ও যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দমনকল মন্ত্রী। ঘটনাস্থল থেকে তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করবেন। এছাড়াও দমকল আলাদা করে তদন্ত শুরু করবে। দমকলমন্ত্রী জানিয়েছেন, কারাখানার ফায়ার এক্সিটের সিড়ির দরজা তালাবন্ধ ছিল। এটা কেন হল তা তদন্তে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন সুজিত বসু।

দমকলের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান সর্ট সার্কিট থেকে বিলকান্দার এই চেয়ার তৈরির কারখানায় ভয়াবহ আগুন লাগে। যেখানে এত কেমিক্যাল নিয়ে কাজ হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে ওয়েলডিং মেশিনও চলে সেখানে অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা কেমন ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।