রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে উদ্ধার হল ৭৮টি মৃতদেহ


ঢাকা: রাত ১০টায় আগুন লাগে বুধবার। তারপর থেকেই চলছে লড়াই। একের পর এক ফায়ার ইঞ্জিন এসেও নেভাতে পারেনি আগুন। কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ঢাকার চকবাজার।

মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা: সোহেল মাহমুদ বেলা সাড়ে ১১ টা নাগাদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ৭৮টি মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। যদিও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কন্ট্রোল রুম থেকে বিবিসি বাংলাকে মৃতের সংখ্যা ৭০টি বলা হয়েছে।

এর আগে পুলিশের তরফ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানানো হয়, ৭০জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে এবং আরও মৃতদেহ থাকতে পারে।

বুধবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পিছনের ওই বিল্ডিংয়ে আগুন লাগে। রাত ৩টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। সকাল হয়ে গেলেও বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে আগুন জ্বলতে থাকে।

২০০-রও বেশি ফায়ার ফাইটার্স কাজ করে রাতভর। জায়গাটা সংকীর্ণ, জলের অভাবও ছিল। তাই আগুন নেভাতে অসুবিধা হয়। বিভিন্ন ধরণের কেমিক্যাল ছিল গুদামে। রাতে বিদ্যুৎ ছিল না, ফলে জেনারেটর লাগিয়ে সার্চ করে দেখা হয় যে ভেতরে কোনও মরদেহ আছে কিনা।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আগুন আগুন বলে চীৎকার শুনে ছোট মেয়েকে কোলে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসেন। সব জিনিসই প্রায় পুড়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি।

২০১০ সালের জুনে পুরানো ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিকের কারখানায় আগুন ধরে ১২৪ জন নিহত হয়েছিলেন। এরপর পুরানো ঢাকার জনবসতিপূর্ণ এলাকায় রাসায়নিকের কারখানা বা সংরক্ষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

তাহলে কিভাবে চকবাজারে রাসায়নিকের গুদাম থাকতে পারে, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

আগুন এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। ফায়ার সার্ভিসের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১২ সালের পর থেকে বাংলাদেশে ৮৮ হাজার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকারও বেশি। প্রাণহানি হয়েছে ১৪০০ জন, আহত হয়েছে অন্তত ৫০০০ মানুষ।