রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে খেলায় মাতলেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি


ঢাকা: মায়ানমারের পর বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ঘুরে দেখলেন হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী নজরদারি সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর বিশেষ দূত হিসাবেই জোলির এই সফর। সোমবার তিনি বাংলাদেশে আসেন। বিমানবন্দরে অবতরণ করার পরই জোলি রওনা দেন বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে অবস্থিত টেকনাফের একটি রোহিঙ্গা শিবিরে। সেখানকার শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। গোটা সফর নিয়ে এই ৪৩ বছর বয়সি অভিনেত্রীর তরফে সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে কক্সবাজার জেলার ডেপুটি পুলিশ প্রধান ইকবাল হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে জোলি মঙ্গলবার বাংলাদেশের আরও কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ঘুরে দেখবেন। রাষ্ট্রসংঘের দূত হিসাবে এই অভিনেত্রী মায়ানমারেও গিয়েছিলেন ২০১৫ সালের জুলাই মাসে। তারও আগে ২০০৬ সালে এসেছিলেন ভারতে। প্রসঙ্গত, ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে গতবছর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে গিয়েছিলে অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া|

উল্লেখ্য, রাখাইন প্রদেশে বার্মিজ সেনা ও রোহিঙ্গা জঙ্গিদের মধ্যে চলা সংঘর্ষের জেরে এপর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১১ লক্ষ শরণার্থী| অভিযোগ, সন্ত্রাস দমনের নামে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা করছে সরকারি বাহিনী| গত বছরই রোহিঙ্গা ইস্যুতে মায়ানমারের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দেয় রাষ্ট্রসংঘ| মায়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের 'গণহত্যা'র ছক কষেই রাখাইন প্রদেশে অভিযান চালিয়েছিল। শ'য়ে শ'য়ে নিরাপরাধ রোহিঙ্গাকে হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া ও জলে ভাসিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনার জেরেই সাত-আট লক্ষ মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়ে এসে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। আর রোহিঙ্গাদের হত্যায় বিদ্বেষ ছড়াতে সাহায্য করেছিল নোবেলজয়ী আং সান সু কি'র নেতৃত্বাধীন সরকার। রোহিঙ্গা কাণ্ড নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের তৈরি করা স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পেশ করা রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরা হয়। গণহত্যার ছক কষা এবং কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গাকে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করার অপরাধে অভিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং ও পাঁচ শীর্ষ সেনাকর্তাকে বিচারের জন্য আদালতে হাজির করার সুপারিশ করে রাষ্ট্রসংঘের মিশন।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধি দল কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে| রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধি দলের প্রফেসর ইয়াং হেলি রোহিঙ্গাদের কাছে জানতে চান তাদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না? এর জবাবে রোহিঙ্গা নেতা দিল মহম্মদ আরিফ বলেন, তুমব্রম্ন বিজিপি ক্যাম্পের নিচে মায়ানমার যে সেতু নির্মাণ করছে তা বাস্তবায়ন হলে বর্ষার মরশুমে বন্যার জলে কোনার পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভেসে যেতে পারে। রোহিঙ্গারা আরও বলেন, মায়ানমার তাঁদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিলে তারা ফিরে যাবেন। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গাদের আশ্বস্ত করেন।