পুলওয়ামার পরেও মাসুদ আজহারকে ‘বিশ্ব সন্ত্রাসী’ বলতে রাজি হল না চিন

জৈষ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহার।

পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার নিন্দায় গোটা বিশ্ব। এশিয়ার দেশগুলি তো বটেই, ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়ার প্রায় সব দেশ। কিন্তু হামলার নিন্দা করেও মাসুদ আজহারকে বিশ্ব সন্ত্রাসী ঘোষণা না করার ব্যাপারে তাদের আগের অবস্থানেই কার্যত অনড় বেজিং।পুলওয়ামা জঙ্গি হানায় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ-এর হাত রয়েছে বলে সেনা সূত্রে খবর। যদিও ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে সেই অভিযোগ উড়িয়ে পুলওয়ামা হামলার নিন্দা করা হয়েছে।
পুলওয়ামা হামলার পিছনে যে জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিরা রয়েছে, তা প্রায় নিশ্চিত। পাকিস্তানের মদতে পুষ্ট এই জঙ্গিগোষ্ঠীর মাথা এবং প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহার। হামলার মাস্টার মাইন্ড এই মাসুদ আজহার বলেই মনে করছেন ভারতীয় তদন্তকারীরা। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রায় সব দেশ এক যোগে এই মাসুদ আজহারকে 'বিশ্ব সন্ত্রাসী' হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জে খোলাখুলিই ভেটো দিয়েছে একমাত্র চিন। পুলওয়ামা হামলার পরও বেজিংয়ের সেই অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হল না।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ এবং পাকিস্তানকে ভারতবিরোধী কাজকর্ম এবং সন্ত্রাসে চিনা মদতের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। বৃহস্পতিবার পুলওয়ামা হামলার পর সেই অভিযোগই ফের সামনে চলে এসেছে। কাঠগড়ায় উঠেছে পাকিস্তান এবং তাদের মদতদাতা চিনা ড্রাগনরা। কিন্তু হামলায় পাক যোগ অস্বীকার করে বার্তা দিয়েছে ইসলামাদ। পাক সরকারের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ''পুলওয়ামায় জঙ্গি হানা গভীর উদ্বেগের বিষয়। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তেই এই ধরনের জঙ্গি কার্যকলাপের নিন্দা করে পাকিস্তান। তবে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে যে ভাবে পাকিস্তানের হাত থাকার কথা বলা হচ্ছে, তা দৃঢ় ভাবে আমরা অস্বীকার করছি।''

অথচ পুলওয়ামা হামলার নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছে প্রায় সারা বিশ্ব। আমেরিকার বক্তব্য, ''জম্মু-কাশ্মীরে হামলার তীব্র নিন্দা করছে ইউএস মিশন ইন ইন্ডিয়া। নিহত জওয়ানদের পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা।'' রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া, ''যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসকেই আমরা নিন্দা করি এবং এই ধরনের অমানবিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে যৌথভাবে লড়াই করি। তাতে কোনও দ্বিমত নেই।'' এর পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, তুর্কি, চেক রিপাবলিকের মতো বহু দেশ সমবেদনা জানিয়ে এবং হামলার নিন্দা করে বার্তা দিয়েছে। পুলওয়ামা আমরা ভুলব না

পাকিস্তানের অস্বীকার আর চিনের মাসুদ আজহারের পাশে দাঁড়ানো বাদ দিলে অন্য প্রতিবেশী দেশগুলি সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছে। নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ সবাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এককাট্টা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছেন।