উত্তরপ্রদেশে বিষ মদ কাণ্ডে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, আর্থিক সাহায্য ঘোষণা


বিষমদে এবার উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে আতঙ্কের চিত্র। দুই রাজ্যেই বিষমদে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০৪ জন। এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে প্রায় ২০০ জন। এখনও বহুজন হাসপাতালে ভরতি। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে। মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের কথা দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন।

কেমন করে এত মানুষের মৃত্যু হল, সে বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এই মৃত্যুমিছিলের পরই রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ওই রাজ্য থেকেও প্রচুর পরিমাণে বিষমদ উদ্ধার হয়েছে। ভবিষ্যতেও এই তল্লাশি অভিযান জারি থাকবে বলে দাবি করা হয়েছে দুই প্রশাসনের তরফে। শুধু তাই নয়, কর্তব্যে গাফিলতির জন্য উত্তরাখণ্ড প্রশাসন আবগারি দফতরের ১৩ জন, চারজন পুলিশকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। একই অভিযোগে যোগীর রাজ্যের ১০ জন পুলিশকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশে বিষমদ তৈরির সঙ্গে যাঁরাই যুক্ত থাকবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।

বিষমদে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা উত্তরপ্রদেশের সাহানরানপুরে। শনিবার পর্যন্ত সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। মিরাটে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনেরও বেশি। আর কুশিনগরে মারা গিয়েছেন অন্তত ১০ জন। সাহারানপুর ও কুশিনগরের আবগারি দফতরের কোনও কর্মী যদি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে কি না, সেজন্য বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে উত্তরাখণ্ডে কমপক্ষে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের প্রতিটি পরিবারকে দুই লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন যোগী আদিত্যনাথ। গুরুতর অসুস্থদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

পাশাপাশি, মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। হাসপাতালে ভরতিদের মাথাপিছু ৫০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। এদিকে, চিকিত্সায় দেরি হওয়াতেও অনেকের মৃত্যু হয় বলে দাবি সাহরানপুরের জেলাশাসক একে পাণ্ডে। তিনি বলেন, "ঠিক সময়ে চিকিত্সার বন্দোবস্ত করা যায়নি। তার জেরেই মৃত্যু হয় অনেকের।" অন্যদিকে, উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত দাবি করেছেন, আবগারি দফতরের কর্মীদের কর্তব্যহীনতার জন্য এই ঘটনা ঘটেছে। আগে থেকে প্রশাসন সতর্ক থাকলে এমন পরিস্থিতি হত না বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।  

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডে একটি শ্রাদ্ধবাড়িতে নিমন্ত্রণে গিয়েছিলেন সাহরানপুরের কিছু বাসিন্দা। সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে ভেজাল মদ নিয়ে রাজ্যে ফেরে এক ব্যক্তি। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তা বিক্রি করে। তা খেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে।