বাজেটে বড় ঘোষণা, কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ছ’হাজার টাকা


মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কৃষকদের ক্ষোভের পারদ ক্রমশই চড়ছিল৷ লোকসভা নির্বাচনের আগে সংসদে পেশ করা শেষ বাজেটে সেই ক্ষোভের ক্ষতে মলম লাগালেন অর্থমন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল৷ কৃষকদের মন জয় করতে একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করলেন তিনি৷

অর্থমন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি নামের ঐতিহাসিক যোজনা আনছে সরকার। ২ হেক্টর পর্যন্ত যাঁদের জমি রয়েছে, তাঁদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি বছরে ৬ হাজার টাকা দেবে সরকার। কৃষকদের সহায়তায় এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রায় ১২ কোটি কৃষক এই সুবিধা পাবেন। মোট খরচ ৭৫ হাজার টাকা। ৩ ভাগে ভাগ হয়ে ২ হাজার টাকা করে অ্যাকাউন্টে ঢুকবে কৃষকদের। তাঁদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে এই প্রথমবার ২২ টি ফসলের ন্যূনতম সমর্থনমূল্য অন্তত ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

শুধু তাই নয়, খরা-বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথায় মাথায় রেখেও বাজেটে কৃষকদের স্বার্থে বিশেষ ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল৷ তিনি জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা শস্য ঋণে ২ শতাংশ ছাড় পাবেন। আর নির্ধারিত সময়ে ঋণ শোধ করলে আরও ৩ শতাংশ ছাড় পাবেন তাঁরা।

মোদি সরকারের শেষ বাজেটে গোমাতার সুরক্ষার জন্য বিশেষ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন পীযূষ গোয়েল৷ ওই প্রকল্পের নাম কামধেনু যোজনা। পশুপালনে বরাদ্দ করা হয়েছে ৭৫০ কোটি টাকা। পশুপালনকারীরা কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঋণও নিতে পারবেন৷ যে কৃষকরা পশুপালন এবং মৎস্যচাষের জন্য কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঋণ নেবেন ২ শতাংশ করে সুদে ছাড় পাবেন তাঁরা। এছাড়া আলাদা মৎস্য মন্ত্রক তৈরি করছে সরকার।

সামনেই লোকসভা নির্বাচন৷ তার আগে কৃষকদের হাতিয়ার করেই ভোটবাক্স মজবুত করা চিন্তাভাবনা করছেন শাসক-বিরোধী উভয়েই৷ কখনও ফসল নষ্ট আবার কখনও কৃষিঋণ মকুব হয়নি, একাধিক অভিযোগে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ কৃষিজীবীরা৷ আসন্ন নির্বাচনের আগে কৃষিঋণ মকুবের দাবিতে সুর চড়িয়েছেন রাহুল গান্ধীও। কৃষিঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইতিমধ্যেই তিনটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় এসেছে হাত শিবির। রাজনৈতিক মহলের মতে, রাহুলের দেখানো পথেই হাঁটল মোদি সরকার৷ কৃষকদের ভোট যে কোনওভাবে হাতছাড়া করতে নারাজ মোদি, তার প্রতিফলন ঘটেছে বাজেটে৷