মাংস-পোলাও না পেয়ে বধূকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা শ্বশুরের


মালদহ: খেতে বসে মাছের বড় মুড়োটা তার চাই। আয়েশ করে নিত্যদিন মাংসের ঠ্যাং চিবোতে না পারলে চড়ে যায় মেজাজ। অভাবের সংসারে প্রায়ই ছেলে-বউয়ের কাছে এমন রাজসিক খাবারের আবদার জুড়ত শ্বশুর। আবদার পূরণ না হলেই পুত্রবধূর কপালে জুটত মার। সঙ্গে ছেলেকে গালিগালাজ, অপমান। প্রতিবাদ করলেই মিলত বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি।

এবার ছেলে-বউয়ের কাছে কষা মাংস ও পোলাও খাওয়ার বায়না ধরেছিল শ্বশুর। কিন্তু টাকা হাতে না থাকায় করা যায়নি সেই আয়োজন। আর তাতেই বিপত্তি। খেতে বসে থালায় মাংস-পোলাও না পেয়ে পুত্রবধূকে একেবারে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল শ্বশুরের বিরুদ্ধে। জখম বধূর নাম রফিনা বিবি (৩৫)। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত শ্বশুর নজরুল শেখ পলাতক।

মালদহের মানিকচক থানার জালালপুর গ্রামে এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। গুরুতর জখম ওই গৃহবধূকে পরিবারের সদস্যরাই উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। এই ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী রবিউল হক তাঁর বাবা নজরুল শেখের বিরুদ্ধে মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার মাথায় ১০টি সেলাই পড়েছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে ওই বধূর। ফিমেল সার্জিক্যাল বিভাগে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে , জখম গৃহবধূ রফিনা বিবির স্বামী রবিউল হক পেশায় হাট ব্যবসায়ী। রবিউলরা তিন ভাই। রবিউলের বাবা নজরুল শেখ ছেলেদের সঙ্গেই থাকেন। পুলিশকে রবিউল জানান, সামান্য রোজগার তাঁর। তাতেই কোনওরকমে সংসার চলে। কিন্তু রোজ রোজ বড় মাছের ঝোল, খাসি-মুরগির মাংস, দামি চালের ভাত অথবা পোলাও খেতে চাইত তাঁর বাবা। সেই খাবার জোগাতে না পারলেই তাঁর স্ত্রীকে গালিগালাজ, মারধর করা হত। বাবার এমন আচরণ নিয়ে এর আগেও প্রতিবাদ করেছেন তিনি। প্রতিবাদ করলেই নজরুল শেখ ছেলে ও ছেলের বউকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন। রবিউলের কথায়, "পড়শিরা ছিল বলেই কোনওমতে প্রাণে বেঁচেছে রফিনা। বাবার এমন অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মানিকচক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।"