জেনেভা কনভেনশনস বা জেনেভা চুক্তি কি - জেনে নিন যুদ্ধাপরাধের নিয়মকানুন


গত কয়েকদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চার রয়েছে জেনেভা কনভেনশনস। টুইটার ট্রেন্ডের অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে জেনেভা কনভেনশনস বা বাংলায় বললে জেনেভা চুক্তি। এটি মূলত যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। ১৯৪৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তিতে এই চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বলী হয়েছিলেন প্রায় সাড়ে ৮ কোটি মানুষ। এরপরই যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে এই আন্তর্জাতিক চুক্তি সাক্ষর করা হয়। শুধু তাই নয়, যুদ্ধবন্দীদের অধিকার নির্ণয় এবং যুদ্ধ ক্ষেত্র ও সংলগ্ন এলাকার অসুস্থ ও অসামরিক ব্যক্তিদের সুরক্ষাও দেয় এই চুক্তি। এখনও অবধি বিশ্বের ১৯৬টি দেশ এই চুক্তি মেনে চলার বিষয়ে স্বাক্ষর করেছে।

বস্তুত ১৯৪৯ সালের জেনেভা সম্মেলনের আগেই ১৮৬৪ সাল থেকে এই বিষয়ে ৩ টি সম্মেলন হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আগের সম্মেলনগুলির চুক্তিগুলিকে সংশোধন করে এবং সেই জেনেভা সম্মেলনের চুক্তি জুড়ে একটি সম্মিলিত রূপ দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে আরও ৩টি বাড়তি প্রোটোকল যুক্ত করা হয়েছে।

দেখে নেওয়া যাক জেনেভা সম্মেলনের চুক্তিগুলি কী কী -

প্রথম জেনেভা সম্মেলন
এই চুক্তি এই আহত এবং অশক্ত সৈন্যদের রক্ষা করে। জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, ধর্ম, বিশ্বাস, নাগরিকত্ব ও ধন-সম্পদ নির্বিশেষে মানবিক আচরণ পাওয়া নিশ্চিত করে। এছাড়া এটি নির্যাতন, আক্রমণ এবং বিচার ছাড়াই মৃত্যুদণ্ডের ঘটনাকেও নিষিদ্ধ করে। সেইসঙ্গে সঠিক চিকিৎসা এবং যত্ন পাওয়ার অধিকারও দেয়।

দ্বিতীয় জেনেভা সম্মেলন
এই চুক্তি জলপথে যুদ্ধের বিষয়ে। ডুবে যাওয়া রণতরীর সৈন্য ও রণতরীতে আহত, রোগাক্রান্ত সৈন্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এই চুক্তি। হাসপাতাল-জাহাজের ক্ষেত্রে বিশেষ সুরক্ষা দেয় এই চুক্তি।

তৃতীয় জেনেভা সম্মেলন
এই চুক্তি যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে আচরণ বিষয়ক। এতে বলা হয়েছে যুদ্ধবন্দীদের ক্ষেত্রেও প্রথম সম্মেলনের চুক্তির ধারা মানতে হবে। সেঈই সঙ্গে যুদ্ধবন্দীরা শুধু মাত্র তাদের নাম, পদ ও পরিচয় জানাতে বাধ্য থাকবে। অন্য কোনও রকম তথ্য আদায়ের জন্য তাদের নির্যাতন করা যাবে না।

চতুর্থ জেনেভা সম্মেলন
অসামরিক নাগরিকদের অমানবিক আচরণের হাত থেকে এবং অসুস্থ ও আহত সৈন্যদের আক্রমণের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে চুক্তি করা হয়েছিল।

পরবর্তীকালে যুক্ত হওয়া ৩ প্রোটোকল
প্রোটোকল ১ - আন্তর্জাতিক সশস্ত্র সংঘর্ষের শিকারদের সুরক্ষা সম্পর্কিত

প্রোটোকল ২ - আন্তর্জাতিক নয় এমন সশস্ত্র সংঘর্ষের শিকারদের সুরক্ষা সম্পর্কিত

প্রোটোকল ৩ - একটি অতিরিক্ত স্বতন্ত্র প্রতীক গ্রহণ সম্পর্কিত