মাধ্যমিকে প্রশ্নফাঁসের জন্য তৈরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, সিআইডি-র জালে ৫


মাধ্যমিকের একের পর এক প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার তদন্তে নামল সিআইডি। আর শুরুতেই অনেকটা এগিয়ে গেলেন তদন্তকারীরা। সিআইডি সূত্রে খবর, বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার সাহায্যে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন ফাঁসে অভিযুক্ত  ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও ২ জন সন্দেহভাজনকে আটক করেছেন গোয়েন্দারা। ধৃতরা শাহবুল আমিন, শাহবাজ মণ্ডল, সাজিদুর রহমান। আটক দুজনের নাম, পরিচয় এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই পাঁচ অভিযুক্ত একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে প্রশ্ন ফাঁস করছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর উত্তরও এই গ্রুপের মাধ্যমেই তারা ছড়িয়ে দিচ্ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রথম দিন বাংলা, দ্বিতীয় দিন ইংরাজি প্রশ্ন, পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা পর থেকেই ঘুরতে থাকে হোয়াটসঅ্যাপ-সহ নানা সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায়। পরের দুদিন ইতিহাস এবং ভূগোলের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা পরই প্রশ্ন বেরিয়ে যায় বাইরে। পরীক্ষার যৌক্তিকতা এবং নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। ক্ষোভ বাড়তে থাকে শিক্ষক মহলে। এভাবে পরপর প্রশ্নফাঁসের ঘটনা রীতিমতো কৌতুকের পর্যায়ে চলে যায় নানা স্তরে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ভূমিকায় শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।

প্রথম দিন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা সাংবাদিক সম্মেলনে কার্যত মেনে নিয়েছিলেন পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।  তবে পরীক্ষা বাতিল করেননি। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ইংরাজি প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার পর থেকে প্রায় নিয়ম ভেঙেই আর রোজকার সাংবাদিক বৈঠক করেননি পর্ষদ সভাপতি। গত বছর উত্তরবঙ্গের এক স্কুল থেকে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল শিক্ষা মহলে। প্রধান শিক্ষক এবং অভিযুক্ত শিক্ষক জবাবদিহি, শাস্তির মুখে পড়েছিলেন। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এবছরই প্রথম স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের ওপর পরীক্ষাকেন্দ্রের ভার দিতে চায়নি পর্ষদ। বদলে পর্ষদ মনোনীত সরকারি আধিকারিকদের ওপরেই পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়ছিল। কিন্তু তারপরেও প্রায় প্রতিটি প্রশ্নপত্রই ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এতেই পর্ষদের ভূমিকা সমালোচনার মুখে। 

তবে এমন বেনজির ঘটনার তদন্ত ভার দেওয়া হয়েছে সিআইডি-কে। তদন্তে নেমেই অপরাধে জড়িত সন্দেহে ৫ জনকে জালে এনে  সিআইডি আধিকারিকরা যত দ্রুত সম্ভব অপরাধে মূলে যেতে চাইছেন।