সন্ত্রাস দমনে পদক্ষেপ করুক পাকিস্তান, সংযত হোক দুই দেশই, পরামর্শ আমেরিকার


মাইক পম্পেয়ো

পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার জবাবে প্রত্যাঘাত ভারতের। সময়মতো দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানও। দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের এই সংঘাতে উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক মহল। এতদিন পাকিস্তানের হয় সওয়াল করলেও, মঙ্গলবার ভারত-পাকিস্তান দু'পক্ষকেই সংযত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে চিন। এ বার আমেরিকার তরফেও তেমনই পরামর্শ এল। সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানকে কড়া পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নিতে অনুরোধ জানিয়েছে দুই দেশকেই।
পুলওয়ামায় হামলার জবাবে মঙ্গলবার ভোরে পাকিস্তানে ঢুকে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। এই ঘটনায় সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় একটি বিবৃতি জারি করেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো। তাতে তিনি বলেন, "সন্ত্রাস দমনে পদক্ষেপ করেছে ভারত। সেই নিয়ে তাদের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। ভারত এবং গোটা উপমহাদেশে নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখতে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছি ওঁকে। পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির সঙ্গেও কথা হয়েছে। যত শীঘ্র সম্ভব দেশের মাটিতে নাশকতামূলক কাজকর্ম বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে বলেছি ওঁকে।"

ভারতকে হুঁশিয়ারি দেওয়া নিয়েও পাকিস্তানকে সতর্ক করেছেন বলে জানিয়েছেন পম্পেয়ো। তাঁর কথায়, "এই মুহূর্তে সংঘাত বাড়তে না দেওয়াই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। তাই কোনওরকম সামরিক পদক্ষেপ করা ঠিক হবে না। শাহ মাহমুদ কুরেশিকে সে কথা জানিয়েছি। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশেরই সংঘাতে না যাওয়া উচিত বলে মনে করে আমেরিকা। তার বদলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে সচেষ্ট হতে বলেছি।"

কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে গত ৭০ বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খুঁজে বার করায় বরাবরই আগ্রহ দেখিয়েছে দিল্লি। তবে শুরু থেকেই সংঘাতের পথ বেছে নিয়েছে ইসলামাবাদ। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয় লক্ষ্য করে হামলা চালায় তাদের আশ্রিত জঙ্গিরা। তার দায় স্বীকার করা তো দূর, বরং সেই হামলার পর থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখায় লাগাতার সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে আসছে তারা। গত এক সপ্তাহ ধরে নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় গোলাগুলি বর্ষণ করে চলেছে পাক সেনা। সেই পরিস্থিতিতেই জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিরা নতুন করে ভারতে আত্মঘাতী হামলা চালানোর ছক কষছিল বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর আসে। তার পরই মঙ্গলবার ভোরে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালাকোটে জঙ্গি বিরোধী অভিযান চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা।