পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার চার দিন পরে হত জইশের শীর্ষ নেতা কামরান


জইশ-ই-মহম্মদের শীর্ষ নেতা কামরান।
পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় ৪৯ জন জওয়ান নিহত হওয়ার চার দিন পরে সেই এলাকাতেই নিহত হল জইশ-ই-মহম্মদের শীর্ষ নেতা কামরান এবং আরও দুই জঙ্গি। তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক সেনা মেজর, তিন জওয়ান এবং এক পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। 

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মতে, কামরানই পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। তবে কামরানই মূল মাথা এ কথা মানতে রাজি নন স্বরাষ্ট্র কর্তারা। তাঁদের মতে, মূল মাথা হল রশিদ গা‌জ়ি। 

পুলওয়ামার লেথপোরায় যেখানে সিআরপি-র উপরে হামলা হয়েছিল তার ১০ কিলোমিটার দূরে পিংলিশ এলাকায় গত কাল রাতে জঙ্গি গতিবিধির খবর পায় বাহিনী। আজ ভোরে অভিযান শুরু হয়। প্রায় আঠারো ঘণ্টা সংঘর্ষ চলে। সেনার দাবি, নিহত তিন জঙ্গির মধ্যে রয়েছে কামরান ও জইশ জঙ্গি হিলাল আহমেদ। তৃতীয় জঙ্গির পরিচয় এখনও জানা যায়নি। (রাতে একটি সূত্র দাবি করে, এই জঙ্গি রশিদ গা‌জ়ি হলেও হতে পারে।)
কে কামরান?
• পাকিস্তানি নাগরিক। জইশ-ই-মহম্মদের সদস্য
• পুলওয়ামা কাণ্ডে মূল চক্রী রশিদ গাজ়ির সহযোগী
• দীর্ঘদিন কাশ্মীরে যুবকদের উগ্রপন্থায় উদ্বুদ্ধ করায় যুক্ত 
• মাসুদ আজহারের দুই ভাইপোর খুনের বদলা নিতে গাজ়ির সঙ্গেই কাশ্মীরে আসে সে 
জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন সেনার মেজর বিভূতিশঙ্কর ঢোন্ডিয়াল এবং শেও রাম, হরি সিংহ, অজয় কুমার নামে তিন জওয়ান। এক পুলিশ কর্মী এজ়াজ় আহমেদও মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন সেনার ব্রিগেডিয়ার হরবীর সিংহ ও রাজ্য পুলিশের ডিআইজি অমিত কুমার-সহ ১০ জন অফিসার ও জওয়ান। গুলির লড়াইয়ের নিহত হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা মুস্তাক আহমেদ বাট। পুলিশের মতে, জঙ্গিরা তাঁর বাড়িতে লুকিয়ে ছিল। সেনার সঙ্গে গুলির লড়াই চলার সময় তাঁকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তারা।

গত বছর জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের ভাইপো তালহা রশিদ ও উসমান কাশ্মীরে বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়। তার পরেই বড় মাপের বদলা নিতে মাসুদের ঘনিষ্ঠ রশিদ ও কামরানকে উপত্যকায় পাঠানো হয়। সূত্রের মতে, দক্ষিণ কাশ্মীরে জঙ্গি দলে নিয়োগ চলাকালীন রশিদের সঙ্গে পরিচয় হয় আদিল দারের। আদিলকে কেন্দ্রে রেখেই গড়া হয় আত্মঘাতী হামলার ছক। 

অন্য দিকে আজ পুলওয়ামা কাণ্ডের তদন্তেও উঠে এসেছে নয়া তথ্য। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, গাড়ি ও মোটরবাইকের রিমোট কন্ট্রোল ব্যবহার করে বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে জঙ্গিরা। পুলওয়ামার ক্ষেত্রেও সেই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। গোয়েন্দাদের মতে, এই ধরনের রিমোট কন্ট্রোল বাজারে সহজেই পাওয়া যায়। পুলওয়ামায় ব্যবহৃত স্করপিয়ো গাড়িটিতে আরডিএক্স ও অন্য বিস্ফোরকের যে মিশ্রণ ছিল তাতে এমন রিমোটের সাহায্যেই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল আদিল দার।