উত্তাল অরুণাচল, উপমুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আগুন ধরালো বিক্ষোভকারীরা


অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হল অরুণাচলের ইটানগর।রাজ্যের বাইরের দুই আদিবাসী সম্প্রদায়কে স্থায়ী বাসিন্দার সত্ত্বা দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে অরুণাচল প্রদেশ। ইটানগরে মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডুর বাড়ির সামনে গণ্ডগোল শুরু হয়। নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে বিক্ষোভকারীদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শ্যূন্যে গুলি চালায় পুলিস। আহত হয়েছেন অনেকে। তারই প্রতিবাদে উপমুখ্যমন্ত্রী চওয়ন মেইনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে উত্তেজিত জনতা। বাড়ি ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাস্তায় থাকা একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ইটানগরের ডেপুটি কমিশনারের দপ্তরেও ভাঙচুল করে লুঠ চালায় উত্তেজিত জনতা। ডিসির অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে রাখা হয়েছে।


পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তা বন্ধ করে রাখা হবে। কার্ফু জারি করা হয়েছে ইটানগরে।

শুক্রবার ইটানগরের সচিবালয়ে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিস গুলি চালায় বিক্ষোভকারীদের ওপর। সেই গুলিতে মৃত্যু হয় এক বিক্ষোভকারীর। এরপরই আরও বিগড়ে যায় পরিস্থিতি। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিস কর্মীও আহত হয়েছেন। সারারাত ধরে পুলিসের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। এরপরেই ইটানগর জেলা প্রশাসন শুক্রবার থেকেই নিষেধাজ্ঞামূলক ব্যবস্থা জারি করে। এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, অন্য রাজ্যের বাসিন্দাদের অরুণাচলে স্থায়ী বসবাসের বৈধ শংসাপত্র দেওয়া হোক। সেই দাবি নিয়েই বিক্ষোভকারীরা হাজির হয়েছিল সরকারের নেতৃত্বাধীন প্যানেলের কাছে। কিন্তু জানা গিয়েছে, নামসাই এবং ছাঙ্গলাং জেলার ৬ সম্প্রদায়, যাঁরা অরুণাচলের নয় তাঁদেরকে একমাত্র এ রাজ্যে মর্যাদা দিয়েছে সরকারি প্যানেল।
 
শনিবার নাহারলাগুন এলাকায় সেনাবাহিনী ফ্ল্যাগমার্চ করে। এছাড়াও শহরের যেসব জায়গায় উত্তেজনা রয়েছে, সেইসব জায়গাগুলিতেও সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। শুক্রবার রাতে বিক্ষোভকারীরা ৫০টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ১০০টি গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিসকে লক্ষ্য করে ইঁট ছুঁড়তে থাকে বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনায় ২৪ জন পুলিস আহত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা নাগাল্যান্ডের মিউজিক ব্যান্ডের ওপরও হামলা চালায়। অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা খাণ্ডু বলেছেন, '‌ভুল বোঝাবুঝির ফলেই এরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মানুষের মধ্যে ধারনা তৈরি হয়েছে, সরকার ছয় সম্প্রদায়ের জন্য বিল আনতে চলেছে। কিন্তু সরকারের সেরকম কোনও চিন্তা নেই'‌। সরকার বিধানসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চেয়েছে। জনগণের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।