খাপলাং জঙ্গি গোষ্ঠীর সদর দফতর দখল বর্মি সেনার


বিনা রক্তপাতেই ভারত বিরোধী অন্যতম আগ্রাসী জঙ্গি সংগঠনের সদর দফতর দখল হয়ে গেল৷ আশ্চর্যজনক ঘটনা এই অভিযানে একটিও গুলি চলেনি৷ অস্ত্র নামিয়ে নিয়েছে নাগা জঙ্গি সদস্যরা৷ সংগঠনটির মুখ্য কার্যালয় এখন মায়ানমার সেনার দখলে৷ সূত্রের খবর, ভারত সীমান্ত লাগোয়া সাগিয়াংয়ে অভিযান চলে৷ এখানেই দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে নাগা সশস্ত্র গোষ্ঠী সমান্তরাল সরকার পরিচালিত করছিল৷

জানা যাচ্ছে, অভিযানে অংশ নেয় অন্তত ৪০০ বর্মি সেনা৷ এনএসসিএন(খাপলাং) সংগঠনের সদর দফতর টা গা গ্রামে তারা ঢুকে পড়েছে৷ এতদিন বিনা অনুমতিতে সেখানে তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি৷ সীমান্ত পেরিয়ে নাগাল্যান্ড, মনিপুরেও ছড়িয়ে পড়েছে এই খবর৷

ন্যাশনাল সোশালিস্ট কাউন্সিল অফ নাগাল্যান্ড বা এনএসসিএনের খাপলাং গোষ্ঠী বরাবরই প্রবল আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়ে ভারতীয় সেনার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে৷ দুর্গম সীমান্ত পেরিয়ে এই নাগা জঙ্গিদের হামলা ও নাশকতায় বহুবার রক্তাক্ত হয়েছে উত্তর পূর্বা ভারত৷ সম্প্রতি পৃথক নাগালিম (স্বাধীন নাগা এলাকা) আন্দোলনের সশস্ত্র পথটির অন্যতম নেতা এসএস খাপলাংয়ের প্রয়াণ হয় মায়ানমারেই৷ তাঁর মৃত্যুর পর সংগঠনে চিড় ধরছে বলেই বিভিন্ন সময়ে খবর ছড়িয়েছে৷

কোহিমা ও ইম্ফল থেকে পাওয়া সংবাদে জানা গিয়েছে, মায়ানমার সেনার অভিযানে নাগা জঙ্গিদের কার্যালয় দখল নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা চলছে৷ অন্যদিকে মায়ানমারের কিছু সংবাদ মাধ্যমের খবর, এনএসসিএন (খাপলাং) সংগঠনের শীর্ষ নেতারা তাদের অনুগত রক্ষীদের অস্ত্র নামিয়ে রাখার নির্দেশ দেন৷ তারপরেই কার্যালয়ে প্রবেশ করে মায়ানমারের সেনাবাহিনী৷ শান্তি চুক্তিতে সাহায্য করতেই পদক্ষেপ, এমনই জানানো হয়েছে৷

যদিও মায়ানমারের সেনাবাহিনী এই অভিযান সম্পর্কে মুখ খুলতে নারাজ৷ তবে তাদের তরফে জানানো হয়েছে, এটা কোনও দখলকরা পদক্ষেপ নয়৷

পৃথক নাগা এলাকার দাবি তুলে ভারত সরকার বিরোধী অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিল এনএসসিএন৷ ১৯৮০ সাল থেকে তাদের সশস্ত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিন শীর্ষ নাগা নেতা- এস এস খাপলাং, টি মুইভা এবং আইজ্যাক চিচিসু৷ ভারত-মায়ানমার সীমান্ত এলাকায় ত্রাস হয়ে ওঠে এই সংগঠন৷ পরে তাতে ভাঙন ধরে৷ একটি অংশ নরম মনোভাব দেখিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে৷ এর নেতৃত্বে টি মুইভা ও চিচিসু৷ এই সংগঠনটি এনএসসিএন (আই-এম) নামে পরিচিত৷ অন্য শাখা আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে খাপলাং নেতৃত্বাধীন৷ সম্প্রতি খাপালং প্রয়াত হন৷ তারপর সংগঠনের হাল ধরে মোস্ট ওয়ান্টেড নাগা জঙ্গি নেতা কাংগো খন্যাক৷