কখন বলতে হয়, কখন নীরব থাকতে হয় জানতেন অটলজি : মোদী


সংসদের সেন্ট্রাল হলে জায়গা পেলেন প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। মঙ্গলবার উন্মোচন করা হল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর চিত্র। তার পর অটলবিহারী বাজপেয়ীকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ''সংসদের সেন্ট্রাল হলে নতুন রূপে অটলজি আমাদের আশীর্বাদ দেবেন, অনুপ্রেরণাও দেবেন।''

তবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে মোদী যা যা বললেন, তার কোথাও কোথাও বিরোধীদের, ক্ষুব্ধ শরিকদেরও বার্তা দিলেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

প্রধানমন্ত্রী এদিন বাজপেয়ীর ভাষণ সম্পর্কে বলেন মোদী। তাঁর কথায়, ''অটলজির ভাষণের খুব চর্চা হয়। যতটা শক্তি ভাষণে ছিল, তার থেকেও বেশি শক্তি নীরবতায় ছিল। সভায় দু'টো কথা বলেই চুপ করে যেতেন। আর তাতেই সকলের কাছে বার্তা পৌঁছে যেত।''

এর পরই মোদীর সংযোজন, ''কখন বলতে হয়, কখন নীরব থাকতে হয় জানতেন।'' প্রসঙ্গত, গত পাঁচ বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিরোধীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে একাধিক এলাকা। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী কেন চুপ, তা নিয়ে।

প্রতিবারই দেখা গিয়েছে ঘটনার কিছুদিন পর নিজের মত ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কখনও মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছেন মন কি বাত অনুষ্ঠানকে। আবার কখনও জনসভা থেকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।

রাজনৈতিক মহলের মত, এর মাধ্যমে নিজের ওই কৌশলের ব্যাখ্যা দিয়েছেন মোদী। বোঝাতে চেয়েছেন কখন চুপ করে থাকতে হয়, কখন সরব হতে হয়, তা তিনিও বিলক্ষণ জানেন।

অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রশংসা করতে গিয়ে মোদী বলেছেন, ''ঘণ্টার পর ঘণ্টা বললেও অটলজি সম্পর্কে সবটা বলা হয়ে উঠবে না। দশকের পর দশক বিরোধী আসনে ছিল। তাও সাধারণ মানুষের সেবার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন।''

পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, পার্টির বৈঠকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে অটলজি এমন কিছু বলতেন, যাতে পরিবেশ শান্ত হয়ে যেত। তবে বাজপেয়ী যে কখনও নিজের নীতির সঙ্গে আপোস করতেন না, সেকথাও উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিনের বাজপেয়ীর ছবি উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু, লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন ও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ। এছাড়াও ছিলেন সংসদের দুই কক্ষের সাংসদরা।

সেখানে বক্তারা প্রত্যেকেই অটলবিহারী বাজপেয়ীর জীবনের নানা দিক সামনে তুলে ধরেন। মোদীও অটলজির থেকে সকলকে শেখার আবেদন জানান। বলেন, ''গণতন্ত্রে কেউ শত্রু নেই। আমাদের শেখা উচিত।''

প্রসঙ্গত, অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন একবার বলেছিলেন রাজনীতিতে কেউ অচ্ছুত্ নয়। এদিন মোদীও একই ধরনের কথা বললেন। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সেই সময় ছেড়ে যাওয়া শরিকদের বার্তা দিতেই তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী একথা বলেছিলেন। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি মোদীও একই পথে হাঁটলেন?