কাটা আঙুল জোড়া লাগল


ডান হাতের বুড়ো আঙুল কেটে এফোঁড়–ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল বছর ছাব্বিশের হাওড়ার অমিত মণ্ডলের। জরুরি ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার করে কাটা আঙুল জোড়া লাগান কলকাতার চিকিৎসক। এখন রোগী ভাল আছেন। হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়িও চলে গিয়েছেন। ফের ফলো আপ চেক আপে আসেন। ৩–৫ মাসের মধ্যে স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারবেন। জুতোর ফিতে তৈরির কারখানার কর্মী অমিত। ১৫ জানুয়ারি কাজ করার সময় হঠাৎই মেশিনে ডান হাতের বুড়ো আঙুল দু'‌টুকরো হয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নিয়ে আসা হয় সিএমআরআই হাসপাতালে। কাটা আঙুল পলিথিনের প্যাকেটে বরফের মধ্যে রেখে সংরক্ষিত করে আনেন বাড়ির সদস্যরা। ছ'‌ঘণ্টার মধ্যে অসাধ্যসাধন করেন হাসপাতালের প্লাস্টিক, রিকনস্ট্রাকটিভ অ্যান্ড হ্যান্ড সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক অনুপম গোলাস। ‌তিনি জানিয়েছেন,'‌নার্ভ, হাড়, রক্তবাহী শিরা, আঙুল নাড়ানোর জন্য রগ বা টেনডনস সবই কেটে গিয়েছিল। ক্ষুদ্র ধমনি ও শিরাগুলো আধুনিক ক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখে ধীরে ধীরে জুড়েছি। প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু সরিয়ে নিয়ে হাড়ের শেষ অংশে প্লেট যোগ করা হয়। তারপর পেশি, টেনডনস, নার্ভ, ধমনি, শিরা সব জুড়ে দিয়ে প্রতিস্থাপন সার্জারি সম্পন্ন হয়। সাত দিনের মধ্যেই রোগী বাড়ি চলে যান।'‌‌ অমিত জানান, পরিবারের তিনি একমাত্র অর্থ উপার্জন করেন। দুর্ঘটনার পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। এখন একটু একটু করে আগের জীবনে ফিরে আসায় সুস্থবোধ করছেন। চিকিৎসকের মতে, প্রতি মাসে এক ইঞ্চি করে নার্ভ বৃদ্ধি পাবে। এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে সাধারণত ঠিক পদ্ধতিতে পলিথিনে কাটা অংশ রেখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্ত্রোপচার করলে ভাল ফল মেলে। ভবিষ্যতে ঝুঁকির কিছু নেই অমিতের। কাটা আঙুল ঠিকমতো না জুড়লে চার–পাঁচদিনেই বোঝা যায়, তখন আবার কেটে বাদ দিতে হত।