একই যুবতীর সঙ্গে প্রেম, বর্ধমানে আত্মঘাতী কাকা-ভাইপো


বর্ধমান: জমির ধারের আমগাছে ঝুলছে দুই যুবকের দেহ। একটি গেঞ্জির একদিকের হাতায় কাকা, অন্যদিকের হাতায় ভাইপো। ভরসন্ধ্যায় এমন দৃশ্য দেখে ভূত দেখার মত আঁতকে উঠেছিলেন আদিবাসী ক্ষেতমজুররা।পরিজনরা এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার খাঁদরা গ্রামে। মৃতরা হলেন প্রশান্ত রায় ও বিধান রায়। প্রশান্ত সম্পর্কে বিধানের কাকা। তবে নিজের কাকা নয়।প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন ওই দুই যুবক। তবে একসঙ্গে কেন আত্মঘাতী হলেন তাঁরা তা নিয়ে রহস্য ঘনিয়েছে।

সাংসারিক কোনও অশান্তি নেই, অভাব নেই।  তাহলে কেন আত্মঘাতী হলেন প্রশান্ত ও বিধান?  প্রশান্ত রায়ের দাদা সাগর রায় বলেন,  "কেন আত্মহত্যা করল কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। সংসারে কোনও অভাব ছিল না। খাওয়াদাওয়ার সমস্যা নেই।বাড়ি রয়েছে। তাহলে মরল কেন। তবে অনুমান করছি হয়তো কোনও মেয়ের সঙ্গে দুইজনই হয়তো প্রেম করছিল। বিষয়টি  জানতে পেরে দু'জনেই এমন কাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে ।" তিনি জানান, প্রশান্ত দিল্লিতে খেলনার কারখানায় কাজ করতেন। দিন দশেক আগে বাড়ি ফিরেছিলেন প্রশান্ত।  এদিকে ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন  বিধানের বাবা  লক্ষ্মীনারায়ণ রায়। কাঁদতে কাঁদতে বললেন, "আমার জোয়ান ছেলে। কেন এমন করল কিছুই বুঝতে পারছি না। কোনও ঝগড়া, অশান্তি কোনও কিছুই ঘটেনি। কোথা থেকে কী ঘটে গেল বুঝতেই পারলাম না।" এবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল কলাবিভাগের ছাত্র বিধানের। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে-ই বড় ছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝে মাঝে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মদ্যপান করত প্রশান্ত। সেই দলে অবশ্য বিধান থাকত না।  পড়াশোনা নিয়েই থাকত সে। গ্রামের একটি পুকুর একপাড়ে প্রশান্তদের বাড়ি আর অন্যপাড়ে বিধানদের। সরস্বতী পুজোর দিন অর্থাৎ রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে জমির ধারে দুইজনকে একটি আমগাছে একই গেঞ্জির ফাঁসে ঝুলতে দেখেন আদিবাসী ক্ষেতমজুররা। তবে দুই  পরিবারের কেউই থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।