মরে কঙ্কাল হয়ে গিয়েছে মানসিক রোগী বাবা, খাবার দিতে এসে দেখল ছেলে


একজন মানসিক রোগী সমাজে কতটা ব্রাত্য হতে পারে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নদিয়ার পলাশীপাড়া। বাবা কবে মারা গিয়েছেন জানতেই পারলেন না ছেলে। খাবার দিতে এসে উদ্ধার বৃদ্ধের কঙ্কাল।

পলাশীপাড়ার সাহেবনগরে একটি ঝোপঝাড়ে ঘেরা বাড়িতে একাই থাকতেন বছর সাতচল্লিশের প্রিয়ব্রত মণ্ডল। গ্রামের মানুষের দাবি গত পনের বছর তিনি মানসিক রোগে ভুগছিলেন। রবিবার বিকালে সেই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় খুলি ও হাড়গোড়। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে ওই দেহাংশ প্রিয়ব্রতরই।

প্রিয়ব্রতর বড়ছেলে শুভঙ্কর মণ্ডল সংবাদমাধ্যমে জানালেন, রবিবার ঘরে এসে বাবাকে ডাকাডাকি করছিলাম। কোনও সাড়া পাচ্ছিলাম না। বাড়ির চারদিকে খোঁজ করেও বাবাকে পেলাম না। শেষপর্যন্ত ঘরের জানালা ভেঙে ঢুকে দেখি ঘরে কঙ্কাল পড়ে রয়েছে।

প্রশ্ন উঠছে প্রিয়ব্রত মারা গিয়েছেন কবে? বেশ কয়েকদিন আগে মৃত্যু না হলে কোনও দেহ কঙ্কাল হতে পারে না। প্রিয়ব্রতকে রোজ খাবার দিতে আসতেন তাঁর ছোট ছেলে। ঘরের একটি জানালা দিয়ে খাবার ভেতরে রেখে যেতেন ছেলে। তিনিও জানতে পারলেন না! অনুমান করা হচ্ছে বেশ কয়েকদিন খাবার হয়তো দেওয়াই হয়নি প্রিয়ব্রতকে।

প্রতিবেশী যুবক শুভ্রজ্যোতি বিশ্বাস জানান, গত ৬ মাস ধরে খাবার দিতে আসতো প্রিয়ব্রতর ছোট ছেলে। আজ হঠাত্ বড় ছেলে এসেছে। বাবার কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে শেষপর্যন্ত জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখে কঙ্কাল পড়ে রয়েছে।

পরিবারে প্রিয়ব্রত ছিল 'মারকুটে পাগল'। এর জন্য দুই ছেলেকে অন্যত্র চলে যান প্রিয়ব্রতর স্ত্রী। তার পর থেকে রোজই ছেলেরা খাবার দিয়ে যেত। রবিবার হঠাত্ এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কোন পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে একজন মানসিক রোগীকে অবহেলা।