ভিনধর্মে সম্পর্কে আপত্তি পরিবারের, চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী যুগল


কাটোয়া: ভিন্নধর্মের নাবালিকার সঙ্গে প্রেম। প্রথম থেকেই সেই সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল দুই পরিবারই। অভিযোগ, এর জেরেই মর্মান্তিক পরিনতি হল ওই যুগলের। শনিবার রাতে রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁদের দ্বিখণ্ডিত দেহ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বর্ধমানের আউশগ্রামে।

বর্ধমানের আউশগ্রামের বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা সোমনাথ বাগদি (১৮)। স্থানীয় সূত্রে খবর দীর্ঘদিন ধরেই তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এলাকারই বাসিন্দা রেশমা খাতুনের( ১৬)। এবছরই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল ওই কিশোরী। অভিযোগ, তারা ভিনধর্মী হওয়ায় প্রথম থেকেই তাদের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবার। এরপর কয়েকমাস আগে কর্মসূত্রে চেন্নাই চলে যান সোমনাথ। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে কর্মসূত্রে চেন্নাইতেই থাকতেন তার পরিবার। সোমনাথ গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও স্বাভাবিক ছন্দেই চলছিল তাদের সম্পর্ক। এরপর গত বুধবার গ্রামে ফেরেন সোমনাথ। পরে শুক্রবার বিকেল থেকে খোঁজ মিলছিল না রেশমা ও সোমনাথের। এরপরই বিষয়টি অনুমান করে আউশগ্রাম থানায় নাবালিকার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানায় পরিবার। তদন্তে নেমে শুক্রবার রাতেই সোমনাথের কাকার বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। সূত্রের খবর, পুলিশ তাদের নির্দেশ দেয়, যেন দ্রুত ওই যুগলকে খুঁজে বের করেন তাঁরা। এরপর শনিবার স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান এবাদত শেখ ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করে গোটা বিষয়টি জানান সোমনাথের পরিবার।

পরে শনিবার সন্ধেয় ভেদিয়া ও পিচকুড়ির মাঝামাঝি এলাকায় রেললাইনের উপরে দুটি দ্বিখণ্ডিত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পোশাক দেখে তাদের শনাক্ত করা হয়। খবর পেয়ে রেলপুলিশ গিয়ে দেহদুটিকে উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, পরিবারের আপত্তির জেরেই আত্মঘাতী হয়েছে ওই যুগল। তদন্ত শুরু  করেছে আউশগ্রাম থানার পুলিশ। তবে এই ঘটনায়  ভেঙে পড়ে দুই পরিবারই। মৃত যুবকের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, তারা ভেবেছিলেন হয়তো স্বাভাবিক হয়ে যাবে বিষয়টি। তবে এভাবে আত্মহননের পথ বেছে নেবে ওই যুগল তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি।