কোটির বেশি খরচ করে দিল্লিতে ধর্নায় বসবেন চন্দ্রবাবু! সরব বিরোধীরা


বিরোধী নেতাদের দাবি, রাজ্যবাসীর অর্থে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। 


কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে রাজধানী দিল্লিতে ধর্না-প্রতিবাদ-বিক্ষোভ মাত্র এক দিনের। এবং তা করতে গিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে খরচ হবে ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুর এমন সিদ্ধান্তে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে তাঁর নিজের রাজ্যের অন্দরে। বিরোধী দলের নেতাদের দাবি, রাজ্যবাসীর অর্থে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করতে চাইছেন চন্দ্রবাবু। তবে চন্দ্রবাবুর অনুগামীদের মতে, রাজ্যের স্বার্থরক্ষার্থেই এই পদক্ষেপ করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এত টাকা কিসে খরচ হবে? অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যের বিশেষ মর্যাদার দাবি তথা কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে অবস্থান বিক্ষোভ করবে তারা। চন্দ্রবাবুর নেতৃত্বাধীন ওই বিক্ষোভে শামিল হবেন রাজ্যের অ-বিজেপি দলের নেতারা। সঙ্গে থাকবেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনও। তাঁদের সকলকে রাজধানীতে নিয়ে যাওয়ার জন্য দু'টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে রাজ্যের টিডিপি সরকার। অনন্তপুর এবং শ্রীকাকুলম থেকে দক্ষিণ মধ্য রেলওয়ের ২০ কামরার ওই দু'টি ট্রেনে চাপিয়ে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে নয়াদিল্লিতে। সে জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্যের কোষাগার থেকে ওই বিপুল অর্থ বরাদ্দ করেছে চন্দ্রবাবু সরকার। আগামী রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ ওই ট্রেন দু'টি রাজধানী পৌঁছনোর কথা।

এই উদ্যোগে শামিল হয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভকে সফল করতে রাজ্যের সমস্ত অ-বিজেপি দলকেই আর্জি জানিয়েছেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সে আবেদনে চিঁড়ে ভিজছে না। বরং রাজ্যের কোষাগার থেকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। ওয়াইএসআর কংগ্রেসের নেতা তথা বিধায়ক জি শ্রীকান্ত রেড্ডি তো প্রকাশ্যেই একে অযথা অপচয় বলে দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিটি প্রতিবাদই করা হয়েছে সাধারণ মানুষের টাকায়। চন্দ্রবাবুকে উদ্দেশে শ্রীকান্ত রেড্ডি বলেন, "রাজ্যের স্বার্থে নয়, বরং নিজের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই এই প্রতিবাদ করছেন মুখ্যমন্ত্রী।" সেই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, "এই ভাবে সাধারণ মানুষের টাকা কী করে খরচ করতে পারেন তিনি?" রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি কন্নলক্ষ্মী নারায়ণও একই প্রশ্ন করেছেন। তাঁর কথায়, "সাধারণ মানুষের টাকা খরচ করে কী ভাবে রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করতে পারেন চন্দ্রবাবু?" নারায়ণের অভিযোগ, "এ ধরনের ছদ্ম প্রতিবাদ করে রাজ্যবাসীকে ঠকাচ্ছেন তিনি।"

অর্থের অপচয় ছাড়াও চন্দ্রবাবুর বিরুদ্ধে বিরোধীরা ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ করলেও এই পদক্ষেপের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন তাঁর অনুগামীরা। তাঁদের দাবি, রাজ্যের তথ্য, জনসংযোগ ও গ্রামীণ আবাসন মন্ত্রী কে শ্রীনিবাসালু বিরোধীদের তীব্র সমালোচনা করতেও ছাড়েননি। তাঁর দাবি, রাজ্যের নায্য মর্যাদা নিয়ে লড়াইয়ে সরকার যখন পদক্ষেপ করছে, তখন তা নিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে বিরোধীরা। তিনি বলেন, "কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে রাজ্যের মানুষের স্বার্থেই এই প্রতিবাদ করা হচ্ছে। কিন্তু টিডিপি সরকারকে দোষারোপ করা ছাড়া বিরোধীদের আর কিছু করার নেই।"