রাজীবের বাড়িতে কেন সিবিআই? সুপ্রিম কোর্টের পর কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত হাইকোর্টেও


চিটফান্ড মামলায় আজ শুনানি হাইকোর্টেও। স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও কেন পুলিস কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই হানা দিল, প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে নালিশ রাজ্যের। আদালতে পাল্টা যুক্তি খাড়া করে সিবিআইও। তাদের দাবি, আদালত চিটফান্ড সংক্রান্ত অন্য একটি মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। দুটি মামলাকে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে। সিপির বাড়িতে সিবিআইয়ের দেখা করতে যাওয়ার সঙ্গে এই মামলার কোনও যোগ নেই। মঙ্গলবার হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলার শুনানি।

প্রসঙ্গত, সোমবার যখন রাজীবকাণ্ডে তোলপাড় সুপ্রিম কোর্ট, ঠিক সেই মুহূর্তে কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত গড়ায় হাইকোর্টেও। এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি শিবকান্ত শর্মার ঘরে রাজ্য সরকারি আইনজীবী নালিশ করেন, চিটফান্ড সংক্রান্ত একটি মামলায় হাইকোর্ট ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। পরবর্তী শুনানি ও নির্দেশের আগেই কীভাবে সিপি রাজীব কুমারের বাড়িতে যেতে পারে সিবিআই? উল্লেখ্য, সিবিআইয়ের একটি মামলায় রাজ্যের চার পুলিশ অফিসার—দিলীপ হাজরা, শঙ্কর ভট্টাচার্য, অর্ণব ঘোষ ও প্রভাকর নাথকে হাজিরা দেওয়ার নোটিস পাঠিয়েছিল গত বছর। নোটিস পাঠানোর তারিখ ৩০ নভেম্বর। কিন্তু তাঁদের হাজির হতে বলা হয়েছিল ৬ নভেম্বর। গত ডিসেম্বরে আদালতে বিষয়টি উত্থাপন করা হলে ওই নোটিসে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি প্রসাদ। সম্প্রতি সিপি-কেও অন্য একটি মামলায় নোটিস পাঠায় সিবিআই। কলকাতা পুলিস দাবি করে, ওই নোটিসেও ভুল ছিল। সেক্ষেত্রে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ওই ভুলের কথা উল্লেখ করে বিষয়টি এজি আদালতের দৃষ্টিতে আনে। এরপর আদালত ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই বিষয়ে স্থগিতাদেশ জারি করে। 

সিবিআই-এর যুক্তি, রাজ্য যে বিষয়টিকে এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক করতে চাইছে, তার সঙ্গে রবিবার সন্ধ্যায় রাজীব কুুমারের বাড়িতে যাওয়ার সঙ্গে  কোনও সম্পর্ক নেই। 

কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআইয়ের যাওয়া নিয়ে 'নালিশ' জরুরি ভিত্তিতে শোনার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য।  কিন্তু বিচারপতি শিবকান্ত প্রসাদ সোমবার জানিয়ে দেন, রাজ্যের আবেদন আদালতের তালিকায় নেই। আজ, মঙ্গলবার রাজ্যের আবেদন সংক্রান্ত মামলা তালিকাভুক্ত হলে শুনানি হবে।

সিবিআই বনাম কলকাতা পুলিস বিবাদকাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে গঠন হয়েছে তিন সদস্যের বেঞ্চ। ওই বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি ছাড়াও রয়েছেন বিচারপতি দীপক গুপ্তা এবং বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। এদিন সেই মামলারও শুনানি এই বেঞ্চে।

কলকাতা পুলিস কমিশনার রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সারদা কাণ্ডের তদন্তে অসহযোগিতা এবং সিবিআই কর্তাদের হেনস্তার অভিযোগ এনে আজ সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয় সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে সরকারি আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, সারদা চিটফান্ড মামলায় পুলিস কমিশনার রাজীব কুমারকে একাধিকবার তলব করা হয়। কিন্তু বারবারই তদন্তে অসহযোগিতা করেন তিনি। এমনকি পুলিস কমিশনারের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করারও অভিযোগ তোলে সিবিআই।