ছাত্র থাকলেও শিক্ষক নেই বহু স্কুলে, ভোটের মুখে বদলি প্রায় ৫০০ প্রাইমারি টিচার


ছাত্র আছে শিক্ষক নেই। আবার কোথাও এক স্কুলে দুজন প্রধান শিক্ষক। আর এই সব অসুবিধা নিয়ে কোনও অভিযোগ জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়নি স্কুল শিক্ষকদের। ফলে শিক্ষা দপ্তরের এই তুঘলকি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন সাধারণ শিক্ষকরা। আর এই বদলির ফলে লাটে উঠে যেতে বসেছে বহু স্কুল। পঠনপাঠন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন বহু ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবকদের একাংশ।

গত ৪ ফেরুয়ারি স্কুলশিক্ষা দপ্তর থেকে একটি বদলি সংক্রান্ত আদেশনামা বের হয়। সেই আদেশনামায় বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রাইমারি স্কুল থেকে তুলে নেওয়া হবে অতিরিক্ত শিক্ষকদের। আর এই অতিরিক্ত শিক্ষকদের অন্যত্র তুলে নেওয়ায় দেখা দিয়েছে সমস্যা। বদলি হওয়া শিক্ষকদের অভিযোগ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এই সব শিক্ষকদের তোলা হয়েছে। মূলত পুরাতন শিক্ষকদের তোলা হয়েছে। অথচ কোনও নতুন শিক্ষকদের তোলা হয়নি। অথচ ২০১৮ শিক্ষক নিয়োগের আগে সেই সব স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা অনুপাত একদম ঠিক ছিল। বিভিন্ন স্কুলে নতুন শিক্ষক আসায় ছাত্র-ছাত্রীর অনুপাতে বেড়ে গেল শিক্ষক-শিক্ষিকা। আর এই বদলির আদেশনামায় নতুন শিক্ষকরা থেকে গেলেন নিজেদের স্কুলে। আর পুরনো শিক্ষকরা অতিরিক্ত হয়ে চলে গেলেন দূরের স্কুলে। শুধু তাই নয়, কোনও শিক্ষক অন্য জেলা থেকে বদলি হয়ে আসলে তাকে পাঁচ বছরের মধ্যে নতুন করে বদলি করা যায় না অন্য জেলাতে। এই ক্ষেত্রে মানা হয়নি সেই নিয়ম নীতিও। বদলি করা হয়েছে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের। এছাড়া দেখা যাচ্ছে বদলি নিয়ে যে আদেশনামা এসেছে সেখানে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে নতুন স্কুলে শিক্ষকদের বদলি হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে সময় দেওয়া হয়নি কোনও শিক্ষকদের। আর কেউ যদি সেই নিয়ম অমান্য করে তাহলে বেতন কাটারও নির্দেশ আছে এই আদেশনামাতে। সব মিলিয়ে ভোটের মুখে প্রায় পাঁচশো শিক্ষককে নিজের স্কুল থেকে সরানো হল অন্যত্র।

এবিষয়ে ক্যানিং সার্কেলের সভাপতি শিক্ষক দেবব্রত মণ্ডল বলেন, 'কোনও আলোচনা ছাড়াই এই নির্দেশনামা এসেছে শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে, শুধু তাই নয় বহু স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, টিচার ইনচার্জকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি স্কুলে দেখা গিয়েছে স্কুল ছাত্র আছে শিক্ষক নেই। কোথাও প্যারা টিচার রেখে অন্য শিক্ষকদের তুলে নেওয়া হয়েছে। তারপর একদিনের নোটিসে সকলকে কাজে যোগদান করতে বলা হয়েছে। আমরা সাংগঠনিক ভাবে বিষয়টি জানিয়েছি।'