‌কর্মসংস্থানে জোর দিয়েই বিধানসভায় রাজ্য বাজেট পেশ


এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে বিধানসভায় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। বাজেট পেশের আগেই কেন্দ্রর স্বৈরাচারী আচরণের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সত্যাগ্রহ আন্দোলনের সমর্থনে মোদি সরকারকে আক্রমণ করে অমিত মিত্র অভিযোগ করেন যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় কেন্দ্র অযাচিত হস্তক্ষেপ করে চলেছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় বাজেটে রাজ্যের একাধিক প্রকল্পকে নকল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও জিডিপি বৃদ্ধিতে বাংলা এক নম্বর জায়গা করে নিয়েছে। যা দেশে রেকর্ড বলে দাবি করেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী।

বাজেট পেশের আগে রাজ্যের একাধিক সরকারি প্রকল্পের কথা বলেন তিনি। রাজ্যের রাজস্ব আদায় অনেকটাই বেড়েছে। মোদি সরকার যখন কৃষকদের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন তখন পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের আয় তিনগুণ বেড়েছে। কৃষকদের ১০০০ টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়া হচ্ছে। ধান দিন চেক নিন প্রকল্পের সুবাদে ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন কৃষকরা।

ফসলবিমা যোজনায় ২৪ লক্ষ কৃষকের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। এই বিমার জন্য কোনও টাকা কেন্দ্রের কাছ থেকে নিচ্ছে না রাজ্য সরকার। খাদ্যসাথী প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন রাজ্যের ৮ কোটি ৮২ লক্ষ মানুষ।

রাজ্য বাজেটে এক কথায় কৃষক এবং শ্রমজীবী মানুষের জন্য সরকারের একাধিক প্রকল্পকে তুলে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী। মোদি যেখানে বছরে ২ কোটি কর্মসংস্থানের কথা ঘোষণা করেছিল। তার জেরে গত চার বছরে দেশে ২ কোটি মানুষের চাকরি গিয়েছে। রাজ্য সরকার রাজ্যের ৫০ হাজার বেকার যুবক–যুবতীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ গড়ে তোলার জন্য এককালীন এক লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন অমিত মিত্র। রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়িকর্মীদের মাসিক ভাতা ৫০০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে আশাকর্মীদের মাসিক ভাতা  ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে উপকৃত হবেন ২ লক্ষ ১০ হাজারেরও বেশি অঙ্গনওয়াড়িকর্মী এবং ২০ হাজারেরও বেশি আশাকর্মী।

চুক্তি ভিত্তিক গ্রুপ ডি এবং গ্রুপ সি কর্মীদের মাসিক ভাতা ২০০০ টাকা করে বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন অমিত মিত্র। এমনকী চুক্তি ভিত্তিক তথ্য প্রযুক্তি কর্মীদেরও মাসিক ভাতা ২০০০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে।

চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের অবসর গ্রহণের পর যে ২ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হত সেটি বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক গ্রুপ ডি কর্মীদের যাঁরা মাধ্যমিক উত্তীর্ণ এবং তিন বছর যাঁরা কাজ করে ফেলেছেন তাঁদের গ্রুপ সি পদে উন্নীত করা হতে পারে। এমনই একাধিক কর্মসংস্থানমুখী সিদ্ধান্ত এবারের রাজ্য বাজেটের মূল আকর্ষণ ছিল। এককথায় বলতে গেলে এবারের রাজ্য বাজেট পুরোটাই কর্মসংস্থানমুখী করেই তৈরি করা হয়েছে।