হোটেলের ঘরে আত্মঘাতী দম্পতি, কান্না শুনে দরজা ভেঙে কর্মীরা দেখে বাবা-মাকে জড়িয়ে কাঁদছে ৩ বছরের সন্তান


সাত সকালে হোটেলের ঘরের ভিতর থেকে এক শিশুর কান্নার আওয়াজ আসছিল। প্রথমে কেউ খুব একটা পাত্তা দেয়নি। ছোট বাচ্চা খিদেতে কাঁদছে ভেবে সবাই প্রথমে এড়িয়েই যায়। কিন্তু সময় গড়ালেও কান্নার আওয়াজ না থামায় সন্দেহ হয় হোটেলকর্মীদের। অনেক ডাকাডাকি করার পরেও কেউ দরজা না খোলায় সন্দেহটা আরও গাঢ় হয়। তারপর দরজা ভেঙে ঘরের ভিতর ঢুকতেই চক্ষু থ হয়ে যায় হোটেলকর্মীদের।

হোটেলের ঘরের বিছানায় পড়ে এক ব্যক্তির নিথর দেহ। আর হোটেলের ঘরের ফ্যান থেকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে তাঁর স্ত্রী। দম্পতির শিশুকন্যা বিছানায় বসে কাঁদছে। বছর তিনেক বয়স। বাইরের দুনিয়াটার সঙ্গে কোনও পরিচিতি-ই এখনও ঘটেনি তাঁর। অপরিচিত এই জগতে একমাত্র নিরাপদ আশ্রয় তো ছিল বাবা, মা। কিন্তু সেই বাবা, মা কেউ-ই কোনও সাড়া দিচ্ছে না। ছোট্ট অবুঝ মন ঠিকমতো বুঝতেও পারছে না যে কী বিপদ ঘটে গিয়েছে! শুধু একবার বাবা আর আরেকবার মাকে জড়িয়ে ধরে নাগাড়ে কেঁদে চলেছে সে। এই দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে যান হোটেলকর্মী। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়িতে।

জানা গিয়েছে, মৃতের নাম প্রদীপ বসাক। বয়স ৩৬ বছর। তাঁর স্ত্রী সুপ্রিয়া বসাক, বয়স ২৭ বছর। ফালাকাটার বাসিন্দা ছিলেন দম্পতি। শুক্রবার-ই মেয়েকে নিয়ে ফালাকাটা থেকে জলপাইগুড়ি এসে হোটেলে ওঠেন দম্পতি। এরপরই এদিন সকালে এই ঘটনা সামনে আসে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস জানিয়েছে, প্রদীপ বসাক কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর স্ত্রী সুপ্রিয়াদেবী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। শিশুকন্যাটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে সে জলপাইগুড়ি পুলিসের হেফাজতে রয়েছে।