‘‌‌যা বলি তা করে দেখাই’‌, জম্মু–কাশ্মীরে দাবি মোদির


'‌আমরা যা বলি তা করে দেখাই।'‌ লোকসভা ভোটের আগে জম্মু–কাশ্মীরবাসীর মন পাওয়ার লক্ষ্যে রবিবার জম্মু, শ্রীনগর এবং লেহ্‌–তে একদিনের ঝটিকা সফরে গিয়ে এই দাবিই করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন সৌভাগ্য যোজনার আওতায় রাজ্যের ১০০ শতাংশ ঘরে বিদ্যুদয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে লেহ্‌–এর ডাটাং গ্রামের কাছে ডাহ্‌ নদীর উপর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং ২২০ কিলোভোল্টের ট্রান্সমিশন সিস্টেমের উদ্‌ঘাটন করেন মোদি। ২০১৪ সাল এই দুটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তিনি। উদ্বোধনের পর মোদি বলেন, '‌আমি সেই দুটি প্রকল্পের আজ উদ্বোধন করলাম যেগুলির ভিত্তিপ্রস্তর একদিন আমি স্থাপন করেছিলাম। সেসময়ই আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আমিই আসব এই দুটি প্রকল্পের উদ্বোধনে। আগের যুগের গয়ংগচ্ছ মানসিকতা আর থাকবে না। আগামী পাঁচ বছরে এই সংস্কৃতিকে আমি পুরোপুরি উপড়ে ফেলব।'
মোদি আরও বলেন, '‌লাদাখ স্বশাসিত পাহাড় উন্নয়ন পর্ষদ বা এলএএইচডিসি আইন পরিবর্তনের পর পর্ষদকে সেই অধিকার দেওয়া হয়েছে যাতে তারা লাদাখের উন্নয়নের নিজেরাই হাতের টাকা ব্যয় করতে পারবে। বিলাসপুর–মানালি–লেহ্‌ রেলপথ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেই লেহ্‌–র উন্নয়ন এবং এখানকার পর্যটন শিল্পও বৃদ্ধি পাবে।'‌ এদিনই ৪০০ কিলোভোল্টের আরেকটি ট্রান্সমিশন সিস্টেম, চন্দ্রভাগা নদীর উপর কিশ্‌তওয়ারে কিরু জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, লাদাখ বিশ্ববিদ্যালয়, রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযানের আওতায় একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন তিনি। এছাড়া চন্দ্রভাগা নদীর উপর জম্মুর সাজওয়াল থেকে কাশ্মীরের ইন্দ্রি পাট্টিয়ানকে যুক্ত করা ১৬৪০ মিটার লম্বা দুই লেনের সেতু, জম্মু এবং শ্রীগনরে দুটি এইমস্ এবং জম্মুতে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ মাস কমিউনিকেশন্‌স‌–এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন কর্মসূচি রয়েছে মোদির। প্রধানমন্ত্রীর সফরের জন্য চার স্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মুড়ে ফেলা হয়েছে সারা জম্মু–কাশ্মীর। উপত্যকায় স্থগিত ইন্টারনেট এবং মোবাইল পরিষেবা। আন্তর্জাতিক সীমান্ত এবং নিয়ন্ত্রণরেখাতেও কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর সফরের একদিন আগে শনিবারই সোপোর পুলিস জইশ জঙ্গিদের একটি সন্ত্রাসবাদী মডিউলের পর্দা ফাঁস করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গত ২৫ জানুয়ারি বারামুল্লা জেলার সোপোর শহরে সিআরপিএফ–এর ১৭৯ ব্যাটেলিয়নের এসবিআই ছাউনিতে গ্রেনেড হামলায় মডিউলের ওই তিন জইশ জঙ্গি জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে পুলিস। তিনজনকেই জেরা করা হচ্ছে। জঙ্গিরা সিআরপিএফ ছাউনি লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়লেও লক্ষ্যভেদ হওয়ায় কোনও জওয়ান হতাহত হননি। ধৃত গুলাম কাদির রাঠের, আইজাজ আহমেদ খান এবং ওয়াইস খালিদ দার, সবাই সোপোরেরই বাসিন্দা। পুলিসের আরও দাবি, জেরায় তিনজনই নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে। এমনকি সোপোরে সক্রিয় দুই জইশ জঙ্গিই তাদের ওই গ্রেনেড সরবরাহ করেছিল বলেও জেরায় ধৃতরা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিসের।