পুলওয়ামা কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, মাসুদ ঘনিষ্ঠ কামরান খতম, সংঘর্ষে হত চার সেনাও

সেনা তল্লাশি অব্যাহত, মূল চক্রী কামরান খতম। 
পুলওয়ামা হামলার মূল চক্রী কামরানকে নিকেশ করল ভারতীয় সেনা। পুলওয়ামার পিংলান গ্রামে একটি বাড়িতে বেশ কয়েক জন জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে, এই খবর পাওয়ার পরই রবিবার গভীর রাত থেকে শুরু হয়েছিল তল্লাশি। তল্লাশি অভিযান চলাকালীনই জঙ্গিরা গুলি চালাতে শুরু করে সেনাবাহিনীর উপরে। সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষে মৃত্যু হয় এক মেজর এবং তিন সেনা জওয়ানের।

গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই জইশ জঙ্গিরও।  এই দুই জঙ্গির মধ্যে পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে হামলার মূল চক্রী কামরানও রয়েছে। অপর এক জঙ্গির নাম হিলাল। হিলাল পুলওয়ামারই স্থানীয় বাসিন্দা। জইশের একটি ঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও খবর। দু'পক্ষের গুলির লড়াইয়ের মাঝে পড়ে মৃত্যু হয়েছে দুই স্থানীয়েরও। মৃত জঙ্গিদের মধ্যে এক জন জইশ কমান্ডার কামরান, এমনটাই জানা গিয়েছে। 

গুলির লড়াই এখনও চলছে, কয়েক জন জঙ্গিও আত্মগোপন করে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জঙ্গি আত্মগোপনের খবর পেয়ে রবিবার গভীর রাতে বাড়ি ঘিরে ফেলে ৫৫ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের সেনা। সেনা সূত্র এবং আরও কয়েকটি সূত্রের কাছে খবর ছিল, কামরান-সহ আরও কয়েক জন জইশ জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে পুলওয়ামার আশেপাশেই।

এই কামরানই অবন্তীপোরায় সেনা কনভয়ে আইইডি হামলার মূল চক্রী, এমনটাই নিশ্চিত করেছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ।বৃহস্পতিবারের হামলার পর নিয়মিত সেনা তল্লাশি চলার সময় সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে জঙ্গিরা। এই হামলার নেতৃত্বে ছিল কামরানই। দীর্ঘক্ষণ প্রত্যাঘাত করে সেনাবাহিনীও। যে ভাবে সেনা ঘিরে রেখেছিল কামরান ও তার সঙ্গীদের। সেখান থেকে কামরানের বেঁচে ফেরা অসম্ভব ছিল, এমনটাও জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।

সেনা সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারের আত্মঘাতী হামলার ৬ থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে পিংলানে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। জঙ্গিদের সঙ্গে গুলি বিনিময়ের ফলে প্রাণ হারিয়েছেন মেজর-সহ চার জওয়ান। গুলির লড়াইয়ের মাঝে পড়ে নিহত হয়েছেন এক স্থানীয় বাসিন্দাও। সকাল ৯টা পর্যন্ত সেনা ও জঙ্গিদের মধ্যে গুলি বিনিময় চলছে।

যৌথ অভিযানে কামরানের সঙ্গে ছিল পুলওয়ামা হামলার সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজন জঙ্গি। সিআরপিএফ ও রাজ্য পুলিশ রবিবার রাত ১২.৫০ মিনিট থেকে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল। জইশ কমান্ডার কামরান লুকিয়ে রয়েছে এ খবর পেয়েই ঘিরে ফেলা হয়েছিল পুলওয়ামার গ্রামের ওই বাড়িটি।  
পিংলান এলাকায় রবিবার গভীর রাত থেকেই সেনা ও জঙ্গিদের মধ্যে গুলি বিনিময় শুরু হয়। ঘটনায় আহত জওয়ানদের শ্রীনগরের সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মেজর ডি এস দোন্ডিয়াল,হেড কনস্টেবল সেভ রাম, অজয় কুমার ও হরি সিং।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ঘটে যাওয়া এই জঙ্গি সন্ত্রাসগুলো সম্পর্কে জানেন? 

বৃহস্পতিবার অবন্তীপোরায় হামলায় পর সিআরপিএফ সূত্রে জানানো হয়েছিল, ওই এলাকায় নিরাপত্তা দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়েছে। কনভয়ের গতিতেও পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছিলেন সিআরপিএফের ডিজি রাজীব ভাটনগর।

তিনি বলেন, ''যান নিয়ন্ত্রণকে বাদ দিলে কনভয়েরও সময়েও পরিবর্তন করার কথা হয়েছে। কনভয় থামা ও বাকি গতিবিধিও নিরাপত্তাবাহিনী ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে সংযোগ বজায় রেখেই করা হচ্ছে।''
 পুলওয়ামা হামলার পরই নরেন্দ্র মোদী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, এর প্রত্যুত্তর দেবেই ভারত। সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে কোথায়, কখন, কী ভাবে প্রত্যাঘাত করা হবে এমনটাও বলেছিলেন তিনি। 

হামলার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দাবি করা হয়েছে 'বদলা চাই'। ইতিমধ্যেই ভারত পাকিস্তানকে কূটনৈতিক এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করা শুরু করে দিয়েছে।