অভিযানে কি ধ্বংস মাসুদের পরিবার?


জইশ শিবিরের মাথারা (বাঁ দিক থেকে): ইউসুফ আজহার (মাসুদ আজহারের শ্যালক), ইব্রাহিম আজহার (মাসুদ আজহারের দাদা) ও মুফতি আজহার খান কাশ্মীরি (কাশ্মীরে জইশের মাথা)

প্রায় দু'দশক পরে পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে কন্দহর কাণ্ডের মূল চক্রীকে মারল ভারতীয় বায়ুসেনা। জইশ-ই-মহম্মদের সব চেয়ে বড় ঘাঁটি বালাকোটে বায়ুসেনার অভিযানে আজ নিহত হয়েছে মাসুদ আজহারের শ্যালক ইউসুফ আজহার। ভারতে জেলবন্দি মাসুদের মুক্তির জন্য বিমান ছিনতাই করেছিল সে। শুধু ইউসুফই নয়, অভিযানে নিহত হয়েছে মাসুদ আজহারের দাদা ইব্রাহিম আজহার ও ভাই তলহা সইদেরও। কন্দহর কাণ্ডের পিছনে বড় ভূমিকা ছিল এই  ইব্রাহিমের।

বায়ুসেনার বোমায় আজ আরও যে সব জঙ্গি নিহত হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে জইশের কাশ্মীর মডিউলের দায়িত্বে থাকা মুফতি আজহার খান কাশ্মীরি, আফগানিস্তান ও কাশ্মীরের বিষয়ে জুড়ে থাকা জঙ্গি মওলানা আম্মার। ভারতীয় গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত জইশের অন্তত ২৫ জন কম্যান্ডার মারা গিয়েছে। বালাকোটের প্রশিক্ষণ শিবিরে গোটা চল্লিশেক আত্মঘাতী জঙ্গি থাকতো, প্রাণ গিয়েছে তাদের। গোয়েন্দাদের দাবি, আজ ভোরে বায়ুসেনার অভিযানে মারা গিয়েছে অন্তত তিনশো জঙ্গি।

বিদেশ সচিব বিজয় গোখলে এ দিন নয়াদিল্লিতে জানিয়েছেন, বালাকোটে ধ্বংস হয়ে যাওয়া জইশের প্রশিক্ষণ শিবিরটির দায়িত্বে ছিল ইউসুফ আজহার। মাসুদ আজহারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই জঙ্গি ভারতে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিতে বছরের পর বছর কাজ করে চলছিল। ১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান আইসি ৮১৪ কাঠমান্ডু থেকে দিল্লি আসছিল। বিমানটিকে ভারতের আকাশ থেকে ছিনতাই করে আফগানিস্তানের কন্দহরে নিয়ে যাওয়া হয়। ইউসুফই ছিল সে দিনের বিমান অপহরণের মূল চক্রী। শেষ পর্যন্ত ১৫৪ জন যাত্রীর প্রাণের বিনিময়ে মাসুদ আজহার, মুস্তাক আহমেদ ‌জ়ারগর ও আহমেদ উমর সঈদ শেখের মতো জঙ্গিদের  মুক্তি দিতে হয়েছিল অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারকে।

পরে সিবিআইয়ের অনুরোধে যে সব বিমান অপহরণকারীর নামে রেড কর্নার নোটিস জারি হয়, সেই তালিকায় ছিল ইউসুফ।  করাচিতে জন্ম ইউসুফের। কথা বলতো হিন্দি ও উর্দুতে। বিমান অপহরণের পরেও মাসুদ আজহারের সঙ্গে মিলে ভারতে জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে গিয়েছে সে। তবে পাকিস্তানের মদত থাকায় মাসুদের মতো তার বিরুদ্ধেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। আজ সেই মোস্ট ওয়ান্টেড সেই জঙ্গি নিহত হল বায়ুসেনার বোমার আঘাতে।