জেলা জুড়ে ব্যাঙ্ক জালিয়াতের রমরমা! ধরা পড়ল এটিএম স্কিমারদের একটা বড় গ্যাং

উদ্ধার হয়েছে জালিয়াতির প্রায় ২৫ লাখ টাকা, দু'ডজনেরও বেশি এটিএম কার্ড এবং কার্ড স্কিমিংয়ের যন্ত্র।

এবার আর নাইজেরীয় বা রোমানিয়ান গ্যাং নয়। খানিকটা বরাত জোরেই বিধাননগর পুলিশের জালে ধরা পড়ল এটিএম স্কিমারদের একটা বড়সড় গ্যাং। এ রাজ্যের সীমানায় ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ায় বসে ওই গ্যাংই দেশ জুড়ে এটিএম স্কিমিং চালাচ্ছিল। ওই দলের তিন জনকে পাকড়াও করে উদ্ধার হয়েছে জালিয়াতির প্রায় ২৫ লাখ টাকা, দু'ডজনেরও বেশি এটিএম কার্ড এবং কার্ড স্কিমিংয়ের যন্ত্র।

কী ভাবে জালে এল ওই চক্র? পুলিশ জানিয়েছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি বিধাননগর পুর নিগমের পাশে একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের এটিএমে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের কর্মী, শ্রীরামপুরের বাসিন্দা পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এটিএমে ঢুকতে গিয়ে লক্ষ্য করেন, এক যুবক একটি কার্ড দিয়ে টাকা তোলার চেষ্টা করছে। সেই কার্ডের রং পুরো সাদা। কোনও ব্যাঙ্কের নামও লেখা নেই। সেটা দেখেই সন্দেহ হয় তাঁর। তিনি চিৎকার জুড়ে দেন। তাঁর ডাকে হাজির হন আরও অনেকে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।

পুলিশ কর্মীরা ওই যুবককে আটক করে নিয়ে গিয়ে তার কাছ থেকে সাদা কার্ডটি বাজেয়াপ্ত করেন। সাইবার ক্রাইম থানার আধিকারিকরা কার্ডটা দেখেই বুঝতে পারেন যে, স্কিমিং করে অন্য কোনও ডেবিট কার্ডের তথ্য চুরি করে ওই কার্ড বানানো হয়েছে। ওই যুবককে জেরা করে জানা যায়, তার নাম সঞ্জয় মণ্ডল। বাড়ি জামতাড়ায়।

পুলিশ ওই যুবককে জেরা করেই চেন্নাইয়ের একটি হোটেলে হানা দিয়ে গ্রেফতার করে ওই চক্রেরই আরও দুই সদস্য বিজয় মণ্ডল এবং সুগেন্দার মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। ওই দু'জনের বাড়িও জামতাড়ায়। তাঁদের কাছ থেকেই উদ্ধার হয় ওই বিপুল পরিমাণে নগদ টাকা এবং কার্ড।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, গোটা চক্রের দু'টি অংশ। একটি অংশ বিভিন্ন এটিএমে কাউন্টারে গিয়ে কার্ডের তথ্য চুরি করার স্কিমিং মেশিন বসিয়ে কার্ডের পিছনে কালো ম্যাগনেটিক স্ট্রিপে থাকা তথ্য চুরি করে। সেই তথ্য কাজে লাগিয়ে নতুন কার্ড বানিয়ে টাকা তোলে অন্য একটি অংশ। গোটা দলটিই জামতাড়ার। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, ওই জেলার একাধিক গ্রামে প্রায় সব যুবকই এই ব্যাঙ্ক জালিয়াতি চক্রে সরাসরি যুক্ত।