সিন্ডিকেটের ভাগ না মেলায় ৯০ হাজার কোটির কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাধা মমতার: মোদী


পূর্ব ভারতের উন্নতি চায় কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রাজ্য সরকার বাধা দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। দুর্গাপুরের জনসভায় এমন অভিযোগই করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।      

নরেন্দ্র মোদী দাবি করেন, পশ্চিমবাংলায় পরিকাঠামো সংক্রান্ত প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আটকে রয়েছে। কয়েকটি প্রকল্প শুরু হলেও ঢিমেতালে চলছে। সড়ক, রেল, জলপরিবহণ, বিদ্যুত্, স্বাস্থ্যের মতো বিষয়ের সঙ্গে জড়িত এই প্রকল্পগুলি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারকে সহযোগিতা করছে না রাজ্য সরকার। 

কেন রাজ্য সরকার সহযোগিতা করছে না, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মোদী। তাঁর কথায়, ''যেখানে সিন্ডিকেটের ভাগ নেই, সেই সব প্রকল্পে হাত দেয় না তৃণমূল। উন্নয়নবিরোধী সরকার থাকলে উন্নয়ন গতি পাবে না। মানুষের স্বপ্নকে নতুন উড়ান দেওয়ার কাজ করছে কেন্দ্রীয় সরকার''। 

আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে রাজ্যের অংশীদারি সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী নিজের ছবি দিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কারণেই এই প্রকল্প থেকে সরে এসেছে রাজ্য সরকার। নিজের ভাষণে সেই অধ্যায়ের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, গরিব মানুষ মোদীর গুণগান গাইছে, সেটা সহ্য করতে পারছেন না মমতা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ''আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে বিহার ও ছত্তীসগঢ়ের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি লাভবান পশ্চিমবঙ্গ। অথচ বিনামূল্যের চিকিত্সা গরিবদের দিতে চায় না রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গের গরিববিরোধী সরকার হাত তুলে নিয়েছে। অসংবেদনশীল ও নির্দয় এই সরকার। নিজেদের স্বার্থে গরিবদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে''। 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কেন এমনটা করেছেন? আমাকে অনেকে বলছেন, সুস্থ হওয়ার পর গরিবদের মুখ থেকে বেরিয়ে গিয়েছে, মোদীর প্রকল্পের জন্য জীবন বেঁচে গিয়েছে। বাংলার গরিবদের মুখ থেকে মোদীর নাম বেরাতেই দিদির ঘুম উড়ে গিয়েছে। দিদির মনে হল, আয়ুষ্মান ভারত যোজনায় সব অসুস্থ সুস্থ হয়ে গেলে লোকে মোদীর গুণ গাইবে। দিদির কী হবে! পশ্চিমবঙ্গের লক্ষাধিক গরিবকে এত বড় সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে দিয়েছেন দিদি। এমন নির্দয়ী সরকারের এক সেকেন্ডও থাকা উচিত নয়''।

সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারকে গরিবদের কাছে সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ''সবকা সাথ সবকা বিকাশ সংকল্প কেন্দ্রের। অটল পেনশন প্রকল্প চলছে। সুনিশ্চিত হয়েছে এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত পেনশন। প্রতি মাসে ১ টাকার প্রিমিয়ামে প্রধানমন্ত্রী জীবনজ্যোতি ও প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা যোজনায় ২ লক্ষ টাকার বিমা পাচ্ছেন দেশবাসী। উপকৃত হয়েছেন ২১ কোটি মানুষ। এর মধ্যে প্রায় ৮০ লক্ষ পশ্চিমবঙ্গের। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প। সিন্ডিকেটকে ভয় পাবেন''। 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন,''এরাজ্যে শিশুরাও জানে 'ট্রিপল টি ট্যাক্স' মানে তৃণমূল তোলাবাজি ট্যাক্স। কলেজে ভর্তি, শিক্ষকদের বদলির জন্য এখানে টাকা লাগে। পশ্চিমবঙ্গের অনেক স্কুলে শিক্ষক নেই। কারণ, তাঁরা আদালতে চক্কর কাটছেন''।