৫ লাখ পর্যন্ত করযোগ্য আয়ে ছাড়, ঊর্ধ্বসীমা না বাড়িয়ে ঘুরপথে মধ্যবিত্তকে স্বস্তি

মধ্যবিত্তের আয়করে দ্বিগুণ ছাড় ঘোষণা পীযূষ গয়ালের।

ভোটের আগে জনদরদী ভাবমূর্তি তুলে ধরার এটাই শেষ সুযোগ ছিল মোদী সরকারের কাছে। সেই সুযোগের পুরোপুরি ফায়দা তুলল সরকার। অন্তর্বর্তী বাজেটে ঘুরপথে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়করে ছাড়ের ঘোষণা করলেন পীযূষ গয়াল। ঘুরপথে বলা হচ্ছে, কারণ আদপে আয়করের যে ঊর্ধ্বসীমা আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছিল, তাতে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। কিন্তু ছাড় এমন ভাবে বাড়ানো হয়েছে, যাতে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোনও কর দিতে হবে না। করযোগ্য আয় ৫ লক্ষ টাকার বেশি হলে তাঁদের ক্ষেত্রে কার্যত কোনও সুবিধাই দেওয়া হয়নি। আয়করের ঊর্ধ্বসীমা যে ২.৫ লক্ষ টাকা ছিল, তাতে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি।

তাহলে নতুন ঘোষণা অনুযায়ী কী ভাবে নির্ধারণ করা হবে আয়কর? ধরা যাক, কারও আয় ৭ লক্ষ টাকা। বিনিয়োগ, স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন, বাড়িভাড়া, গৃহঋণের সুদ-সহ সব ছাড় মিলিয়ে যদি আয় পাঁচ লক্ষ টাকার কম হয়, তাহলে কোনও কর দিতে হবে না। কিন্তু ধরা যাক সব ছাড় বাদ দিয়েও আপনার করযোগ্য আয় ৫ লক্ষ ১ হাজার টাকা। সেক্ষেত্রে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা ধরা হবে আগের সেই আড়াই লক্ষ টাকাই। অর্থাৎ বাকি ২ লক্ষ ৫১ হাজার টাকার উপরই আপনাকে আয়কর দিতে হবে। কিন্তু যদি আয়করের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হত, তাহলে আপনাকে শুধুমাত্র ১০০০ টাকার উপর কর দিতে হত। আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো এবং বাজেটে যে ঘোষণা করা হয়েছে তার মধ্যে পার্থক্য এটাই।

অর্থনীতিবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নয়া ঘোষণার ফলে আদপে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্তের সুবিধা হবে। উচ্চবিত্তরা আয়করে কোনও ছাড় কার্যত পাবেন না। তবে নয়া নিয়মে প্রায় তিন কোটি মানুষ উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ভোটের আগে মধ্যবিত্তের মন জয়ে ঘুরপথে কর ছাড়ের এই ঘোষণা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

করযুক্ত আয়ের উপর আগে ছাড় দেওয়া হত ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত। করের পরিভাষায় যাকে বলা হয় 'স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন'। সেই ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এর বাইরে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের উপর কর ছাড় আগেই ছিল। ফলে সব মিলিয়ে কার্যত ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত (যদি বিনিয়োগ দেড় লক্ষ টাকা ধরা হয়) কোনও কর দিতে হবে না।এ ছাড়া ব্যাঙ্ক-পোস্ট অফিসে ফিক্সড ডিপোজিটের উপর প্রাপ্ত সুদের পরিমাণ ১০ হাজার টাকার বেশি হলেই টিডিএস কাটা হত। বাজেটে সেই ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রবীণ নাগরিকদের অনেকেই ফিক্সড ডিপোজিট করে মাসিক আয় স্কিমে (এমআইএস) টাকা জমা রাখেন। সেখান থেকে মাসে মাসে সুদের টাকা তুলে নেন। তাঁদের ক্ষেত্রে এই ঘোষণায় সুবিধা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

এ ছাড়া ব্যাঙ্ক-পোস্ট অফিসে ফিক্সড ডিপোজিটের উপর প্রাপ্ত সুদের পরিমাণ ১০ হাজার টাকার বেশি হলেই টিডিএস কাটা হত। বাজেটে সেই ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রবীণ নাগরিকদের অনেকেই ফিক্সড ডিপোজিট করে মাসিক আয় স্কিমে (এমআইএস) টাকা জমা রাখেন। সেখান থেকে মাসে মাসে সুদের টাকা তুলে নেন। তাঁদের ক্ষেত্রে এই ঘোষণায় সুবিধা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।