২৫ বছর পর ফিরল নিখোঁজ বাবা, হাসপাতালে জড়িয়ে ধরল ছেলে


২৫ বছর পর খুঁজে পাওয়া গেল মৃত বাবাকে। সরকারি খাতায় মৃত। মা এখনও পেনশন পান। এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্রের এক বন দপ্তরের কর্মীকে খুঁজে পাওয়া গেল গঙ্গাসাগরের কপিলমুনির আশ্রমের পাশে। মহারাষ্ট্রের বঙ্গিওয়াড়ের রাজারাম পচুরিয়াকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেয়ে হাসপাতালে ভরতি করা হয়।

অরণ্য বিভাগে কাজ করতেন রাজারাম। সালটা ১৯৯৪। একদিন জঙ্গলে কাজে যান তিনি। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি। পুলিশ খোঁজ করেছে অনেক। কিন্তু দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ার পর রাজারামকে মৃত ঘোষণা করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। নিয়মমতো মৃত সরকারি কর্মীর পেনশন পান স্ত্রী। গত ২৬ অক্টোবর, হঠাৎ সাগরের কপিলমুনি আশ্রমে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে। সাগর ব্লক হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। চিকিৎসকদের কাছে কোনও নাম বা ঠিকানা তখনও বলতে পারেননি তিনি। বাড়ির কোনও লোকের সঙ্গে যোগাযোগও করা যায়নি। এরপর তাঁকে মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। ভাষা সমস্যা থাকায় হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। মারাঠি ভাষা হওয়ায় মহারাষ্ট্রের হ্যাম রেডিওর সঙ্গে যোগাযোগ করে পশ্চিমবঙ্গ হ্যাম রেডিওর অধিকর্তারা। তারপর বেশ কিছু ছবি ও অডিও পাঠানো হয় মহারাষ্ট্রে। জানা যায়, মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর জেলার কোটোয়ারি থানা এলাকার বাসিন্দা রাজারাম।

ঠিকানা খুঁজে বাড়িতে খবর পাঠানো হয়। কাকদ্বীপ আসেন রাজারামের ছেলে মহেশ। কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে বাবাকে দেখেই কিছুক্ষণ নীরব হয়ে তাকিয়ে ছিলেন তিনি। ২৫ বছর পর চেহারার অনেক বদল এসেছে। তবে বাবাকে চিনতে অসুবিধা হয়নি। মারাঠিতে কিছু প্রশ্ন করার পরই পরস্পরকে জড়িয়ে ধরেন তাঁরা। বাড়ি ফেরার সব ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। কিছু আইনি পরীক্ষার পর ২৫ বছর পর নিজের বাড়ি ফিরবেন রাজারাম। মহারাষ্ট্রের ছোট্ট গ্রাম থেকে কীভাবে গঙ্গাসাগরের কপিলমুনির আশ্রমে এলেন? ২৫ বছর কোথায় কোথায় ছিলেন? সব রহস্যই থেকে গিয়েছে। ছেলের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর এখন বাড়ি ফিরতে চান রাজারাম।