পছন্দের চ্যানেল বাছাইয়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমা বাড়াল TRAI


টিভিতে পছন্দের চ্যানেল দেখা যাবে কি যাবে না? সন্ধেবেলার রোজনামচায় কি আপাতত যতি? কড়ি ফেললেই তেল মাখা যাবে তো? দর্শকদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে এমন হাজারও প্রশ্ন। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে পছন্দের কেবল চ্যানেল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরও সুযোগ বাড়াল  TRAI। বাড়ানো হল পছন্দের চ্যানেল বাছাই করার সময়সীমা৷ ৩১ মার্চের মধ্যে  নিজের পছন্দের চ্যানেল বাছাই করলেই হবে।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কলকাতা এবং জেলার কয়েক লক্ষ কেবল গ্রাহক ইতিমধ্যেই তাঁদের পছন্দের চ্যানেল বেছে নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের বক্তব্য, টাকা জমা দিয়ে দেওয়ার পরও তাঁরা পছন্দসই চ্যানেল দেখতে পাচ্ছেন না। অনেকের বক্তব্য, বিনামূল্যে কিছু চ্যানেল দেখা যাচ্ছে। বাকি পেড চ্যানেল দেখা যাচ্ছে না। এরই মাঝে সময়সীমা কেন বাড়ল ট্রাই, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে জটিলতা৷ ট্রাই কিন্তু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, যে সমস্ত গ্রাহক এখনও তাঁদের পছন্দের চ্যানেল বেছে নিতে পারেননি, তাঁরা ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়তি সময় পাবেন৷ আর যতদিন এই পছন্দের পর্ব না মিটছে, ততদিন পুরনো পছন্দ অনুযায়ী পুরনো হিসেব মতো টাকা দিয়েই চ্যানেল দেখতে পাবেন দর্শকরা। পাশাপাশি যাঁরা ইতিমধ্যেই পছন্দের চ্যানেল বেছে নিয়েছেন, তাঁদের আর এ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না মোটেই।

এর বাইরেও নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে ট্রাই। বলা হয়েছে যে সমস্ত গ্রাহক সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও পছন্দের চ্যানেল বেছে নিচ্ছেন না তাঁদের জন্য থাকবে 'বেস্ট ফিট প্ল্যান'৷ এতে দর্শকদের গত কয়েক মাসের চ্যানেল পছন্দের ধরনটা দেখে নিয়ে সেই ধরনের চ্যানেল বেছে দিতে পারে কেবল সংযোগদাতা বা এমএসওরাই। এমনই সুপারিশ করেছে ট্রাই। সঙ্গে বিনামূল্যের চ্যানেলগুলি সমস্ত দর্শক যেমন দেখার সুযোগ পাচ্ছেন তেমনই পাবেন। কিন্তু এর জন্য বর্তমান মূল্যের থেকে বেশি মূল্য যেন গুনতে না হয়, সে বিষয়েও ট্রাইয়ের পক্ষ থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে এমএসওদের। ফলে রাজ্যজুড়ে টেলিভিশন দর্শকদের চিন্তার তেমন কোনও কারণই নেই।

রাজ্যের কেবল টিভি সংযোগদাতা সংস্থাগুলিও দর্শকদের নিশ্চিন্ত করে জানিয়েছে, যাঁরা ইতিমধ্যেই 'মাইগ্রেট' করেছেন অর্থাৎ পছন্দের চ্যানেল বেছে নেওয়ার পর্ব সেরে ফেলেছেন তাঁদের চিন্তা করার কোনও কারণ নেই। বহু অপারেটরের অধীনেই ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত গ্রাহক মাইগ্রেট করে ফেলেছেন। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকজনের মাইগ্রেশন বাকি থাকায় কিছু সমস্যা হচ্ছে। তবে বর্তমান সমস্যার জন্য  শেষ মুহূর্তে একসঙ্গে অনেক গ্রাহকের 'মাইগ্রেট' করার চেষ্টার জেরে প্রযুক্তিগত কারণকে দায়ী করা হয়েছে৷ মন্থন কেবলের প্রধান সুদীপ ঘোষ জানালেন, কলকাতায় তাঁদের দেড় লক্ষ ও তার বাইরে রাজ্যের অন্যান্য জেলায় তাঁদের পাঁচ লক্ষের বেশি গ্রাহক রয়েছেন। কিন্তু তাঁরা গোটা নেটওয়ার্কে উন্নততম প্রযুক্তির সফটওয়্যার ব্যবহার করায় মাইগ্রেশনে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। তবে গ্রাহকরা সবাই যদি একেবারে শেষ মুহূর্তের জন্য সব কাজ ফেলে রাখেন তাহলে একই সঙ্গে এমএসও এবং গ্রাহক সকলেরই সমস্যা হতে পারে। আরেক অগ্রণী কেবল সংস্থা সিটি কেবলের প্রধান সুরেশ শেঠিয়া জানালেন, বাংলা, বিহার, ঝাড়খণ্ড মিলে তাঁদের প্রায় ৫৫ লক্ষ গ্রাহক রয়েছেন, যার মধ্যে ৯০ শতাংশের মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ। যে সমস্ত গ্রাহক প্যাকেজ বদলাতে চাইছেন না, তাঁরা পুরনো  মূল্যেই সমস্ত চ্যানেল দেখতে পাবেন৷