ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে আলকায়দা, লাদেনপুত্রের খোঁজে পুরস্কার ঘোষণা আমেরিকার

লাদেনপুত্র এই হামজাই এখন আলকায়দার মাথা।

ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে আলকায়দা। এর নেপথ্যে রয়েছে লাদেনপুত্র। হন্যে হয়ে তাকে খুঁজছে মার্কিন সরকার। সে জন্য ১০ লক্ষ ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করেছে তারা। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি টাকা।

সৌদি আরবের ধনী পরিবারের ছেলে থেকে সন্ত্রাসের মাথা হয়ে ওঠা ওসামা বিন লাদেনের কাহিনি সর্বজনবিদিত। ৯/১১-র পর তার খোঁজে আফগানিস্তান চষে ফেলেছিল মার্কিন বাহিনী। তখন থেকেই ধুঁকতে শুরু করে আলকায়দা। প্রাণে বাঁচতে সপরিবারে পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে আশ্রয় নেন ওসামা বিন লাদেন। ২০১১ সালে সেখানে তাঁর হদিশ পায় মার্কিন সরকার। রাতের অন্ধকারে সেনা পাঠিয়ে তাকে নিকেশ করা হয়।

সেইসময় গোটা পরিবারের হদিশ মিললেও, নিখোঁজ ছিল লাদেনের ছেলে হামজা বিন লাদেন। অ্যাবটাবাদে লাদেনের ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া চিঠি ও নথিপত্র ঘেঁটে সেইসময়ই তাঁর ছেলে হামজা বিন লাদেন সম্পর্কে জানা যায়। নিভৃতে তার প্রশিক্ষণ চলছিল, যাতে বাবার অবর্তমানে আলকায়দার নেতৃত্ব বুঝে নিতে পারে। তখনই তার নাগাল পেতে চেষ্টা চালানো হয়েছিল। তবে সম্প্রতি তার সক্রিয় হয়ে ওঠার খবর মিলেছে। আর তাতেই নড়েচড়ে বসেছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। দু'বছর আগেই হামজাকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণা করেছিল মার্কিন সরকার। এ বার নতুন করে তার খোঁজ শুরু হয়েছে।

মার্কিন বিদেশ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হামজা বিন লাদেনের বয়স ৩০-৩৩ বছরের মধ্যে। ৯/১১-র নেতৃত্বে থাকা মহম্মদ আটার মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে তার। এই মুহূর্তে আফগান-পাক সীমান্তের কাছে গোপন ডেরায় আশ্রয় নিয়ে থাকতে পারে সে। সেখান থেকেই আলকায়দাকে নতুনভাবে দাঁড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর অভিযানে সিরিয়ায় থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে পালাতে শুরু করেছে আলকায়দার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। হামজা এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে চাইছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। গত কয়েক বছরে ইন্টারনেটে একাধিক ভিডিয়ো ও অডিয়ো রেকর্ডিং প্রকাশ করেছে সে। তাতে কমবয়সী ছেলেমেয়েদের আলকায়দায় যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছে। বাবার খুনের বদলা নিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমি দেশগুলিতে হামলা চালানোর ডাক দিয়েছে। তবে এত সহজে হামজার নাগাল পাওয়া যে সম্ভব হবে না, তা-ও মেনেছেন বিশেষজ্ঞরা। রাষ্ট্রপুঞ্জের সমস্তসদস্য দেশগুলিকে প্রথমে হামজার যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে। তার উপর বসাতে হবে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও। আলকায়দা ও হামজা যাতে অস্ত্রশস্ত্রের জোগান না পায়, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।