জোরালো মিউজিক, চড়া আলোয় অভিনন্দনকে জাগিয়ে রেখেছিল পাকিস্তান


নয়াদিল্লি: গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে পাক বিমান তাড়া করতে গিয়ে অধিকৃত কাশ্মীরের মাটিতে পড়ে ভারতের মিগ বিমান। পাক সেনা বন্দি করে ভারতের উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে। তারপর ৫৫ ঘণ্টা চরম উৎকন্ঠায় কাটে ভারতের। অবশেষে গত শুক্রবার দেশে ফেরেন তিনি। কিন্তু তিনি ভারতের মাটিতে পা রাখার কয়েক মিনিট আগেই একটি ভিডিও প্রকাশ করে পাকিস্তান। যেখানে দেখা যাচ্ছে পাক সেনার প্রশংসা করছেন অভিনন্দন।

এডিট করা ওই ভিডিওতে অন্তত ১৮ টি 'কাট' চোখে পড়বে সহজেই। সেই কাট গুলি থেকেই বহু প্রশ্ন উঠে আসে৷ পাকিস্তান, শারীরিক অত্যাচার না হলেও মানসিক অত্যাচার চালায় ভারতের উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে, এ খবর আগেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়৷ পাকিস্তান তার ওপর কোনওরকম শারীরিক অত্যাচার করেনি সেই কথা ভিডিওতে উঠে আসে বলে জানা যায়৷
 
কিন্তু মানসিক অত্যাচার কোন পর্যায়ে গিয়েছিল তা অজানাই ছিল৷ দ্য প্রিন্ট সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবর থেকে জানা গিয়েছে, ভারতের এই বীর সন্তানের আত্মবিশ্বাস, মনের জোর ভেঙে ফেলতে বিভিন্ন প্রচেষ্টা করা হয়েছিল পাকিস্তানে৷ জোরালো মিউজিক থেকে চোখের সামনে চড়া আলো, যাতে সে ঘুমোতে না পারে, প্রথম ২৪ ঘন্টায় এইসব প্রয়াসে খামতি ছিল না৷ তবে সেই সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে যায় অভিনন্দনের মনের জোরের কাছে৷

ওই সংবাদ মাধ্যমে এও জানানো হয় যে, অভিনন্দনকে প্রথম ২৪ ঘন্টা ঘুমোতে দেওয়া হয়নি৷ দেশে ফেরার পর তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়৷ রবিবার তাঁর MRI স্ক্যান করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, অভিনন্দনের স্পাইনাল কর্ডের নিচের অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখা গিয়েছে। চিকিৎসকরা মনে করছেন, F-16 কে তাড়া করার সময় মিগ বিমান থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ার সময়ই আঘাত লাগে তাঁর পিঠে। সেখান থেকেই এই আঘাত।

এছাড়া তাঁর পাঁজরেও রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। জানা যাচ্ছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মাটিতে যখন তিনি পড়ে যান তখন স্থানীয়রা তাঁকে মারধর করেছিল, তখনই পাঁজরে লাগে এই আঘাত। আগামী কয়েকদিন ধরে আরও একাধিক মেডিক্যাল টেস্ট হবে। বায়ুসেনার এই উইং কমান্ডারকে সাইকোলজিক্যাল পরীক্ষাও দিতে হয়েছে ইতিমধ্যেই৷ বন্দি থাকাকালীন অনেক ট্রমা ও মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে৷ তাঁর মুখ থেকে তথ্য আদায় করতে অনেক নৃশংস পন্থা অবলম্বন করতে পারে পাকিস্তান৷ তাই এই পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি৷

বায়ুসেনার অফিসারকে আইবির আধিকারিকদের জেরার মুখে পড়তে হতে পারে৷ সাধারণত বায়ুসেনার আধিকারিকদের গুপ্তচর বা কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা জেরা করতে পারে না৷ কিন্তু অভিনন্দনের কেসটি আলাদা৷ তিনি পাকিস্তানে দু'দিনের বেশি সময় ছিলেন৷ সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা- নিজের অফিসারদের অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে অভিনন্দনকে৷ অফিসারদের কাছে নিজের বিশ্বস্ততার প্রমাণ দিতে হবে৷ তাঁকে প্রমাণ দিতে হবে তিনি এখনও ভারতীয় বায়ুসেনার একজন বীর অফিসার৷ ছলে বলে ভয় দেখিয়ে পাকিস্তান তাঁকে চর বানাতে পারেনি৷