রক্তাক্ত জম্মু, বাস স্ট্যান্ডে জঙ্গি হানা, হত ১


হাসপাতালের পথে গ্রেনেড হামলায় জখম এক যুবক (উপরে বাঁ দিকে)। হামলার পরে জম্মু জেনারেল বাসস্ট্যান্ড ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার। 

পুলওয়ামায় নাশকতার ২০ দিন পর ফের জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত জম্মু-কাশ্মীর। জম্মু জেনারেল বাসস্ট্যান্ডে আজ গ্রেনেড হামলা চালায় এক জঙ্গি। ওই হামলায় নিহত হয়েছে এক কিশোর এবং আহত অন্তত ৩২ জন। নাশকতার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ ইয়াসিন জাভিদ ভাট নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, ধৃত জেরায় স্বীকার করেছে, সে-ই গ্রেনেডটি ছোড়ে। তার সঙ্গে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গিগোষ্ঠীর যোগ রয়েছে বলে পুলিশের দাবি। 
জম্মুর ওই বাসস্ট্যান্ড থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়ার একাধিক বাস ছাড়ে। ফলে সেখানে প্রায় সব সময় ভিড় থাকে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ একটি টিকিট বুকিং কাউন্টারের সামনে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটে। অন্য দিনের তুলনায় আজ বাসস্ট্যান্ডে কম ভিড় ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পর কেউ কেউ ভেবেছিলেন টায়ার ফাটার শব্দ। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুল ভাঙে। বিস্ফোরণে আহতদের জম্মুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় হরিদ্বারের বাসিন্দা বছর সতেরোর মহম্মদ শারিকের। হাসপাতাল সূত্রের খবর, আহতদের মধ্যে ১১ জন কাশ্মীরের, দু'জন বিহারের, এক জন করে ছত্তীসগঢ় এবং হরিয়ানার বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে চার জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। তাদের মধ্যে দু'জনের অস্ত্রোপচার করতে হচ্ছে। আহত কুলদীপ সিংহ বলেন, ''আমার স্ত্রী পঞ্জাবে যাবেন বলে তাঁকে বাসে তুলে দিতে এসেছিলাম। যখন বিস্ফোরণ হল তখন ওই জায়গায় বেশ কিছু লোক ছিলেন।'' 

বিস্ফোরণের পরই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি মণীশ কে সিংহ জানান, ধৃত ইয়াসিনকে নাগরোতা এলাকার একটি টোল প্লাজার কাছ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের সূত্র ধরে ইয়াসিনকে চিহ্নিত করা হয়। সিংহ বলেন, ''হিজবুলের কুলগামের জেলা কমান্ডার ফারুক আহমেদ ভাটের সঙ্গে ধৃত ইয়াসিনের যোগাযোগ রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ইয়াসিন জানিয়েছে, ফারুকের কাছ থেকেই সে গ্রেনেড জোগাড় করে। আজ ভোরে সে জম্মু পৌঁছয়।''
এক বছরের মধ্যে তিন বার জম্মুর বাসস্ট্যান্ডে গ্রেনেড হামলা হল। হামলার ব্যাপারে আগাম সতর্কতা ছিল কি না প্রশ্নের উত্তরে পুলিশের আইজি বলেন, ''সতর্কবার্তা সব সময়ই থাকে। সেই মতো নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়। আজকের হামলার আশঙ্কা নিয়ে সুনির্দিষ্ট ভাবে কোনও বার্তা ছিল না।'' সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এলাকা জুড়ে চলছে তল্লাশি।