জামিন অযোগ্য পরোয়ানা, তবু মুক্ত ৩০ হাজার


নির্বাচন কমিশনের কপালে ভাঁজ! প্রথম দফার ভোটের আর ২৬ দিন বাকি। কিন্তু রাজ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এমন ৩০ হাজার ব্যক্তি, যাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। 

কমিশনের কর্তারা বার বার জেলার পুলিশ সুপার-জেলাশাসকদের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। আগামী শনিবার ফের রাজ্যে আসছেন উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। সূত্রের খবর, কেন গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর হচ্ছে না, পুলিশ কর্তাদের কাছে সেই প্রশ্ন তুলবেন তিনি। 

নবান্ন সূত্রের অবশ্য দাবি, পুলিশ যথেষ্ট তৎপর। জানুয়ারির শুরুতে কমিশন যখন গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিল তখন পরোয়ানার সংখ্যা ছিল ৬০ হাজার। আড়াই মাসে পুলিশ প্রায় ৩০ হাজার পরোয়ানা কার্যকর করেছে। নির্বাচনের দিন পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলবে।

রাজ্য প্রশাসনের এই 'সময়সূচি' নিয়েই আপত্তি কমিশনের। তাদের বক্তব্য, ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সময় যাতে এক জনের নামেও গ্রেফতারি পরোয়ানা অকার্যকর অবস্থায় না থাকে, সেটাই লক্ষ্য ছিল। সেই কারণেই ১ জানুয়ারি থেকে পুলিশকে সক্রিয় হতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এখনও ৩০ হাজার পরোয়ানা কার্যকর না হওয়ায় শান্তিপূর্ণ ও অবাধ ভোট করানো নিয়ে উদ্বেগ থাকছেই। কমিশনের এক কর্তার বক্তব্য, ''গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার ক্ষেত্রে অগ্রগতি পুলিশের সক্রিয়তা বিচার করার একটি পথ। হাজার হাজার জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে না পারলে ভোটের সময়ে গোলের আশঙ্কা থাকে।'' 

কমিশন জানিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, বীরভূম এবং দার্জিলিংয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা ব্যক্তির সং‌খ্যা সর্বাধিক। এই জেলাগুলিতে গড়ে দেড়-দু'হাজার এমন ব্যক্তি রয়েছেন। কমিশনের এক কর্তা জানান, পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, যে সব জেলাগুলিতে বিরোধী দলের প্রভাব বেড়েছে, সেখানে গ্রেফতারি পরোয়ানা সবই প্রায় কার্যকর করা হয়েছে। কিন্তু শাসক দলের একাধিপত্য ও তার জেরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে যেখানে সমস্যা, সেখানে তা তেমন কার্যকর হয়নি। 

ভোটের দিন পর্যন্ত গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করা না হলে কী করবে কমিশন? কমিশনের কর্তারা জানান, সে ক্ষেত্রে বুথভিত্তিক 'অ্যাবসেন্টি-শিফটেড-ডিলিটেড' বা এএসডি ভোটারদের যে তালিকা তৈরি হয়, তাতে পরোয়ানা থাকা ব্যক্তিদের নাম তুলে দেওয়া হবে। তাঁরা ভোট দিতে এলেই পুলিশকে জানান হবে। দরকার পড়লে গ্রেফতার করা হবে।