ভস্মীভূত দক্ষিণেশ্বরের ঝুপড়ি, ছাইয়ের ভিতর শেষ সম্বলের খোঁজ আশ্রয়হীনদের


চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে দক্ষিণেশ্বর মন্দির লাগোয়া বালি ব্রিজের নিচে রেল কলোনির একের পর এক ঝুপড়ি৷ আগুন নিভলেও, রবিবার সকালে ধোঁয়ায় ভরে রয়েছে গোটা এলাকা৷ চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ ওই ঝুপড়ির বসবাসকারীদের৷ বাসনপত্র থেকে আসবাবপত্র, সংসারের যাবতীয় সামগ্রীই ছাইতে পরিণত হয়েছে৷ আশ্রয়হীনরা শেষ সম্বলের খোঁজে হাতরাচ্ছেন ছাইয়ের স্তূপ৷ কেউ উদ্ধার করার চেষ্টা করছেন অগ্নিকাণ্ডের পর আসবাবের অংশ৷ কেউ নিজের বাসন তো কেউ আধপোড়া পোশাকেই চোখের জল মুছতে মুছতে গুছিয়ে নিচ্ছেন৷

দক্ষিণেশ্বর মন্দির লাগোয়া বালি ব্রিজের নিচে রেল কলোনির বস্তিতে শনিবার রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুড়ে ছারখার প্রায় ১০০টি ঝুপড়ি ঘর। বেশ কয়েকটি গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণও হয়। শনিবার বলে এমনিতেই রাত পর্যন্ত মন্দির এলাকায় দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল। আটটা নাগাদ আচমকা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বালি ব্রিজের জন্য ওই এলাকায় সব সময়ই প্রচুর বাস ও গাড়ির ভিড় থাকে। ব্রিজের ঠিক নিচেই আগুন লাগায় মুহূর্তে যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায় বালি ব্রিজে। দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন সঙ্গে সঙ্গে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। রাত ১১টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। দমকলমন্ত্রী বলেন, "দমকল কর্মীরা খুব তৎপরতার সঙ্গে কাজ করায় আগুন ছড়াতে পারেনি।" আগুনে বহু পরিবার আশ্রয়হারা ও সর্বস্বান্ত হয়ে গেলেও হতাহতের খবর নেই। তবে উদ্ধার কাজ চালাতে গিয়ে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী নামে স্থানীয় এক যুবক গুরুতর আহত হন।

অগ্নিকাণ্ডের নিশ্চিত কারণ জানা যায়নি৷ দমকল কর্মীদের প্রাথমিক অনুমান, যে সময় আগুন লেগেছে সেই সময় ঝুপড়ির বাসিন্দারা রান্না করেন৷ হয়তো ওই রান্নার জেরেই এই বিপত্তি ঘটেছে৷ আবার শর্ট সার্কিট থেকেও অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনা এড়িয়ে দিচ্ছেন না দমকল কর্মীরা৷ রবিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে ফরেনসিক টিম৷ এদিকে, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের আপাতত স্থানীয় একটি স্কুলে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে৷ খুব শীঘ্রই তাঁদের স্থায়ী পুনর্বাসনের বন্দোবস্ত করা হবে বলেই প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে৷