আবেগে ভাসলেন সহযাত্রীরা, উঠে দাঁড়িয়ে বিমানেই অভিবাদন অভিনন্দনের বাবা-মাকে


অভিনন্দনের বাবা-মাকে অভিবাদন সহযাত্রীদের।

ছেলে অভিনন্দনকে মুক্তি দেবে পাকিস্তান। ঘোষণাটা শোনার পর থেকেই আর স্থির থাকতে পারেননি বর্তমান দম্পতি। সেই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চেন্নাই থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন এয়ার মার্শাল এস বর্তমান ও তাঁর স্ত্রী শোভা বর্তমান।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লির বিমান ধরেন বর্তমান দম্পতি। দেশের সর্বত্রই অভিনন্দনকে নিয়ে এখন জোর আলোচনা চলছে। চেন্নাই থেকে দিল্লিগামী ওই বিমানেও কিন্তু যাত্রীদের মধ্যে অভিনন্দনকে নিয়ে ইতিউতি আলোচনা চলছিল। বর্তমান দম্পতি আর পাঁচটা সাধারণ যাত্রীদের মতোই তাঁদের জন্য নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসেন।
ছেলে অভিনন্দনকে নিয়ে যাত্রীদের আলোচনার টুকরো টুকরো অংশগুলো তাঁদের কানেও ভেসে আসছিল। এই মুহূর্তে তাঁদের ছেলের বীরত্বের কাহিনি সবার মুখে মুখে ঘুরছে। তেমনই পাক সেনার হাতে আটক হওয়ার পরও সকলেই তাঁর ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। সে বিষয়টাও তাঁদের অজানা নয়। তবে আশঙ্কাটা অবশ্য এখন নেই। অভিনন্দনের মুক্তির ঘোষণা আনন্দের জোয়ার এনেছে গোটা দেশে।

চেন্নাই থেকে দিল্লিগামী বিমানে উঠে নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসেন বর্তমান দম্পতি। বিমানের অন্য যাত্রীরা তখনও জানতেন না তাঁদের সঙ্গে এরই বিমানে সফর করছেন উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনের বাবা-মা। তবে বেশি ক্ষণ বিষয়টি চাপা থাকেনি। যাত্রীরা যখন জানতে পারেন তাঁদের সহযাত্রী অভিনন্দনের বাবা-মা, তখন উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভেঙে পড়ে বিমানের মধ্যেই। সবে বিমান তখন দিল্লির মাটি ছুঁয়েছে। যাত্রীরা উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি সহযোগে বর্তমান দম্পতিকে কুর্নিশ জানান। বিমানের ভিতরের পরিবেশটা তখন পুরোপুরি খুশির আবহে বদলে যায়। সকলেই গর্ববোধ করতে থাকেন এমন এক বীর সন্তানের বাবা-মাকে তাঁদের সহযাত্রী হিসেবে পেয়ে। কেউ সেলফি তোলার চেষ্টা করেন, কেউ আবার সেই সুন্দর মুহূর্তটাকে ধরে রাখার চেষ্টা করেন।

বিমানের এক ক্রু জানান, বৃহস্পতিবারের এই সন্ধ্যাটা অন্য দিনের তুলনায় একদম অন্য রকম ছিল। বর্তমান দম্পতি এই বিমানে সফর করছেন জেনে যাত্রীদের 'জোশ'ও ছিল দেখার মতো। এ দিন ওই বিমানের যাত্রীদের মধ্যে কোনও তাড়াহুড়ো ছিল না নামার জন্য। সকলেই অপেক্ষা করেন বর্তমান দম্পতির জন্য। তাঁরা বিমান থেকে প্রথমে নামেন। তার পর একে একে বাকি যাত্রীরা তাঁদের অনুসরণ করেন। বর্তমান দম্পতি যখন নামার জন্য উঠে দাঁড়ান, সকলেই একযোগে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁদের সম্মান জানান।