রাজনৈতিক কারণে খুন বড়মা! সিবিআই তদন্তের দাবি শান্তনু ঠাকুরের


বনগাঁ: বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় শেষ কয়েক বছর শয্যাশায়ী ছিলেন। কিন্তু, কী এমন হল যে, হাসপাতালে ভরতি হওয়ার মাত্র পাঁচদিনের মাথায় প্রয়াত হলেন বীণাপাণিদেবী? মতুয়াদের বড়মার মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি তুললেন তাঁর নাতি ও মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। তাঁর দাবি, এর আগে যতবার অসুস্থ হয়েছেন, বীণাপাণিদেবীকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু এবার পরিবারের লোকেদের না জানিয়েই বড়মাকে ভরতি করা হয় কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। এমনকী, রাজনৈতিক কারণে বড়মাকে খুন করাও হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শান্তনু ঠাকুর।

প্রয়াত হয়েছেন মঙ্গলবার রাতে। বুধবার দিনভর মতুয়াদের বড়মা বীণাপাণিদেবীর শেষকৃত্য নিয়ে টানাপোড়েন চলে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, বৃহস্পতিবার গাইঘাটার ঠাকুরবাড়িতে তাঁর শেষকৃত্য হবে। শেষ ইচ্ছা অনুসারে, ঠাকুরবাড়িতে স্বামীর প্রথমরঞ্জন ঠাকুরের পাশে বড়মাকে দাহ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এখন মরদেহ শায়িত রাখা হয়েছে ঠাকুরবাড়ির নাট মন্দিরে। এদিকে আবার বড়মার মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর নাতি ও মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। বড়মার বিশেষ স্নেহধন্য ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। শাসকদলের দলের টিকিটে জিতেই বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ হয়েছেন বীণাপাণিদেবীর পুত্রবধূ মমতাবালা ঠাকুর। কিন্তু, নাতি শান্তনু ঠাকুর আবার বিজেপি ঘনিষ্ঠ। তাঁর উদ্যোগে চলতি মাসের গোড়ায় গাইঘাটায় মতুয়া মহাসংঘের সভায় যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে দেখা করেছিলেন বড়মা বীণাপাণিদেবীর সঙ্গেও। এই ঘটনার কয়েক দিন পর বড়মার সই করা একটি চিঠি প্রকাশ্যে আনেন শান্তনু ঠাকুর। দাবি করেন, নাগরিকত্ব বিলে সমর্থনের আরজি জানিযে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন বীণাপাণিদেবী। আর এই চিঠিকে ঘিরেই বিতর্ক দানা বাঁধে ঠাকুরবাড়ির অন্দরে।

বড়মার পুত্রবধূ ও তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর পালটা দাবি করেন, বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে বড়মা ভাল করে কথাই বলতে পারেন না। স্মৃতিশক্তিও ক্ষীণ হয়ে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি কীভাবে চিঠিতে সই করলেন, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন মমতাবালা ঠাকুর। বড়মার মৃত্যুর বুধবার সেই প্রসঙ্গ তোলেন মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। তাঁর বক্তব্য, বড়মার সই জাল করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বনগাঁর সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য বড়মার জীবিত থাকা দরকার ছিল। আর যদি প্রমাণ হত চিঠিতে বড়মার সইটি আসল, তাহলে বিপাকে পড়ত এ রাজ্যের শাসকদলই। এই প্রেক্ষাপটে বীণাপাণিদেবী মৃত্যুর পিছনে রাজনীতি আছে কিনা, তা জানতে চান মতুয়ারা।